চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, পানি উঠবেই। কিন্তু পানি যেন দ্রুত নিষ্কাশন হয়ে যায় সেই ব্যবস্থা করতে চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছি।

তিনি বলেন, আগেই খালের বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। তারপরও কেন জলাবদ্ধতা হচ্ছে সেটা বের করতেই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (২২ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় জলাবদ্ধতার প্রকোপ নিরসনে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, সপ্তাহ-দশ দিনের মধ্যে জলাবদ্ধতা কমে যাওয়ার পর যাতে একটি ফলাফল আসে সেই ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জলাবদ্ধতা থেকে যেন মানুষকে কিছুটা মুক্তি দিতে পারি তার জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসকে। সদস্য করা হয়েছে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও চসিক কাউন্সিলর মোবারক আলীকে।

তিনি বলেন, এ কমিটিকে সিএমপি, পোর্ট সবাই সহযোগিতা করবে। যাতে আমরা কোন জায়গায় কোন সমস্যা আছে, কোন জায়গায় বাঁধ আছে, কোন জায়গায় পানি নামতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে তা জানতে পারি। এরপর পানি প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য কমিটি এক সপ্তাহের মধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে পদক্ষেপ নেবে।

মেয়র বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জলাবদ্ধতার প্রকোপ বেড়েছে। জনগণের ভোগান্তিও বেড়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পের কাজ চলছে। এটা চলমান রয়েছে। একটি প্রকল্পের কাজ চলতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে আরেকটা ভোগান্তিতে পড়ে। ভোগান্তি বেড়েছে, মানুষেরও ধৈর্যের সীমা আছে। তাই সবাইকে নিয়ে জলাবদ্ধতা কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে কথা বলছি।

তিনি বলেন, কীভাবে তড়িৎ গতিতে জনগণকে চরম ভোগান্তি থেকে আমরা রক্ষা করতে পারি সেই চিন্তা করছি। তাই একটা সিদ্ধান্তে এসেছি। কাজ করতে গেলে বিভিন্ন সমস্যা থাকবে। কিছু খালে বাঁধ আছে, প্রতিবন্ধকতা আছে। এসব পর্যালোচনা করা হয়েছে। 

মেয়র বলেন, যেখানে বর্জ্য থাকবে সেগুলো পরিষ্কার করা হবে। যেখানে বাঁধ থাকবে সেগুলো অপসারণ করা হবে। মানে পানি নামতে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয়। জনগণ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইনশাআল্লাহ আশা করি জনগণের ভোগান্তি কমে আসবে। পানি উঠবেই। কিন্তু পানি দ্রুত নিষ্কাশিত হওয়ায় ব্যবস্থা যাতে হয় সেটার দিকে লক্ষ্য রেখেই এ কমিটি করা হয়েছে।

সিডিএ থেকে ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়ে মেয়র বলেন, ১০০ কোটি, ১০ কোটি টাকা ব্যাপার নয়। এখন পর্যন্ত কথা হচ্ছে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। টাকার বিষয়টা লং টার্ম প্রসেস। এটা যখন হওয়ায় তখন হবে। কিন্তু আমাদেরকে এখন গুরুত্ব দিতে হবে এই বর্ষায় যেন মানুষের ভোগান্তি কম হয়। 

তিনি বলেন, যেকোনো কাজ করতে গেলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এতো বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রবল বর্ষণ হয়েছে, তাই ভোগান্তি বেশি হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পের যে কাজ করছে তা শেষ হলে জলাবদ্ধতা থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।

সভার শুরুতে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ, চসিক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস ও বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহজাহান।

কেএম/ওএফ