শুধু দেশেই নয়, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উদযাপন করেছে বিদেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো। শনিবার (২৫ জুন) বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে বেশিরভাগ দূতাবাসে উদ্বোধন অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে জাতির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দেশ-বিদেশে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের পাশাপাশি দৃঢ় সংকল্প ও মনোবলের কারণে দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ কামাল আহমেদ এবং নর্থ ক্যারোলিনা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. এবিএম নাসির। 

নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করা হয়। কনস্যুলেটে বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে মিল রেখে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

ইতালিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করেছে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান স্বাগত বক্তব্যে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি দূর থেকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। 

তিনি উল্লেখ করেন যে, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গর্ব, আত্মনির্ভরশীলতা ও  আত্মমর্যাদার প্রতীক। বাঙালি জাতির এ গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিনে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতা, বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত ও যুগোপযোগী পদক্ষেপের ফলেই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার বুকে এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। 

সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ও জনগণের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টার ফলে এ সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়েছে।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করেছে উজবেকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাস। দূতাবাসের আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশন মালদ্বীপ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি প্রদর্শন ও উদযাপন করেছে। হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ আগত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে কেক কেটে পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেন।

ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসেও পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এ সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলো। অন্যদিকে, এই সেতুর ফলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদন ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনও পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উদযাপন করেছে।

এনআই/আইএসএইচ