সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকাসহ নেত্রকোণা ও সিলেট জেলার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এসময় তিনি বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং সেখানে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি হাসপাতালের মালিক, সংগঠন ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।

সভায় বন্যাকবলিত মানুষের চলমান স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবগত করা হয়। এসময় মন্ত্রী বন্যাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য রোগের প্রাদুর্ভব মোকাবিলা এবং কোভিড সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দিকনির্দেশনা দেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় বলেন, বন্যাকবলিত মানুষগুলো আমাদেরই ভাই, আমাদেরই বোন। তারা এখন পানিবন্দি জীবন-যাপন করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক নির্দেশনায় তাদের ঘরে একদিকে শুকনো খাবার সরকার নিশ্চিত করেছে, পানিবাহিত বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে মুক্ত রাখতে স্বাস্থ্যখাতও জোরালোভাবে এগিয়ে এসেছে। এসব এলাকায় এখন সাপের কামড় থেকে বাঁচাতে দ্রুত অ্যান্টিভেনম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন সরবরাহ করতে হবে। কোভিড সমস্যায় জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে গুরুতর কোনো রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবার কোনো ঘাটতি মেনে নেওয়া হবে না।

বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, বন্যার্ত মানুষের জন্য  প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক নির্দেশনা রয়েছে। তিনি বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের সব মহলকে নির্দেশনা দিয়েছেন। বন্যাদুর্গত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানাতে তিনি নিজেও এসেছেন।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে বন্যায় কারো খাদ্য, চিকিৎসার কোনো ব্যত্যয় হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ও নেতৃত্বে আমরা বন্যা ও কোভিড মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি, এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী, বিভিন্ন সংগঠন, সেনাবাহিনীসহ সবাই সহযোগিতা করেছে, এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ। ইনশাআল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আগামী দিনেও দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হব। 

মত বিনিময় সভা শেষে মন্ত্রী সেখানে কর্মরত সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে আরো কিছু ত্রাণ সামগ্রী দুর্গম এলাকায় পৌঁছে দিতে হস্তান্তর করেন মন্ত্রী। এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিলেটে হজরত শাহজালাল (রা.) এর মাজার জিয়ারত করেন।

মত বিনিময় সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খানসহ সিলেট জেলা প্রশাসন ও জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/জেডএস