নড়াইলে পুলিশের উপস্থিতিতে সংখ্যালঘু শিক্ষক ও ছাত্রের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনাকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর সই করা বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ১৮ জুন নড়াইলের সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্র ফেসবুকে ভারতের নুপুর শর্মাকে সমর্থন জানালে অন্যান্য ছাত্র ও স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে।

স্থানীয়দের পাশাপাশি উত্তেজিত অন্যান্য ছাত্ররা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। তারা ওই ছাত্রকে জোর করে অফিস থেকে বের করে আনতে চাইলে অধ্যক্ষ পুলিশে খবর দেন। 

এ সময় উত্তেজিত জনতার চাপে পুলিশের উপস্থিতিতে এবং পাহারায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ওই ছাত্রকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসা হয়।

স্বাধীন দেশে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে একজন শিক্ষকের সঙ্গে এমন অপমানকর ন্যক্কারজনক ঘটনায় মহিলা পরিষদ স্তম্ভিত, লজ্জিত, গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের ন্যক্কারজনক ও অপেশাদার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ।

মহিলা পরিষদ মনে করে, শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্পদায়ের প্রতিনিধি হওয়ার কারণে এমন অপমান ও বর্বরতার শিকার হতে হয়েছে এ শিক্ষককে। একজন শিক্ষকের প্রতি এ অপমান পুরো জাতির জন্য অপমান। 

তারা বলেন, আমরা লক্ষ করছি, বেশ কিছুদিন ধরেই সংখ্যালঘু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটছে। ঘটনাগুলো কুচক্রী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ঘটাচ্ছে। 

যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব নাগরিকের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা করা, সেখানে কর্তব্যরত পুলিশের এমন ভূমিকার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এ ধরনের ঘটনা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক।

মহিলা পরিষদ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে এবং আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে।

জেইউ/আরএইচ