সংসদে প্রধানমন্ত্রী / ছবি : সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে আগামী অর্থবছরে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার ও বিদ্যুৎ খাতে সরকারের যে ঘাটতি হবে, তা আমরা মূল্য বাড়িয়ে ভোক্তা পর্যায়ে শতভাগ চাপিয়ে দেব না। ফলে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি ব্যয় বাড়বে। 

তিনি বলেন, কার্যকর ভর্তুকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভর্তুকির ব্যয় সহনশীল মাত্রায় রাখা এবং আমদানির ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব। সবাইকে দেশীয় পণ্যের দিকে নজর দিতে হবে।

বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সমাপনী বক্তব্যে এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।  

শেখ হাসিনা বলেন, চলমান কোভিড-১৯ অতিমারির অভিঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কটে উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় আমদানিভিত্তিক মূল্যস্ফিতির কারণে দেশে বর্তমান মূল্যস্ফিতির যে ঊর্ধ্বগতি, তা নিয়ন্ত্রণে রাখার ওপর প্রাধান্য দিয়েই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এখন আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে প্রত্যেককে তার নিজ নিজ জায়গায় থেকে যতটুকু সম্ভব কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে। সঞ্চয় করতে হবে। প্রত্যেককে নিজস্ব সঞ্চয় বাড়ানোর পাশাপাশি মিত্যব্যয়ী হতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি, কেউ ঢালাওভাবে ব্যবহার করবেন না। অপচয় যেন না হয়, সবাইই কৃচ্ছতা সাধন করে, সঞ্চয় করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। এটা করতে গেলে আমাদের তিনটি দিকে মনযোগ দিতে হবে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে সঞ্চয় বাড়ানোর মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখা। সব অপ্রয়োজনীয় ব্যয় তথা অপচয় কমানো। আমদানিকৃত বিলাস দ্রব্য কেনা পরিহার করে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনায় মনযোগ দিতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, কথায় কথায় দৌড়ে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না। দেশে ভালো চিকিৎসা হয়। শত বাধা-চাপের মুখে পড়লেও আমরা দৃঢ়ভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। অনেক প্রতিকূল অবস্থায় আমাদের এগোতে হচ্ছে। যেখানে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীলতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে আমরা এত বাধা অতিক্রম করেও অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করছি, তার কারণ আমাদের দেশের মানুষ, তাদের কিন্তু একটা আলাদা শক্তি আছে। শুধু যদি একবার তারা বুঝতে পারে, অনুধাবন করতে পারে তখনই তাদের শক্তিটা বোঝা যায়। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য হয়েছে। জাতির পিতার ডাকে অস্ত্র তুলে নিয়ে এদেশের মানুষই কিন্তু বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। তারা জীবন বিলিয়ে দিয়েছিল। সেই মানুষের দেশ আমাদের। কাজেই আমাদের মানুষকে নিয়ে এগোতে হবে।

তিনি বলেন, আজ যে সারা বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ এবং এই করোনা ভাইরাস-এটা মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব ইনশাল্লাহ। ২২-২৩ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট মহান জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে আমি মনে করি জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতায় আমরা তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।

এইউএ