ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র দাখিল করে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ভুয়া বিল পাস করানোর অপচেষ্টার অভিযোগে হাসপাতালের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ফোরকান আলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাতের কাছে অভিযোগপত্র পৌঁছে দেন জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। 

ডা. সেখ ফজলে রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে আটটি আইসিইউ, আটটি ভ্যান্টিলেটর, একটি কার্ডিয়াক প্যাশেন্ট মনিটরের যে একটি বিল নিয়ে অ্যাকাউন্ট অফিস থেকে আপত্তি এসেছে, সেটার ব্যয় মঞ্জুরিপত্রের কাগজ যথাযথ ছিল না, এটা ভুয়া ছিল। এ কারণে সেখান থেকে বিলটি ফেরত আসে। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। সেই মোতাবেক আমরা দুদকে অভিযোগ করেছি। আমরা জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকাউন্ট সেকশনের ফুরকানসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, এ ঘটনার পরে ফুরকানকে অ্যাকাউন্টের কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তার অনিয়মগুলো দুদক তদন্ত করে দেখবে।  দুদক তদন্ত করে সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে বলে আশা করছি।

দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিলের বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তারা বলছেন ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরি দেখিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিল দাখিল করে। এই কাগজপত্রগুলো জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এজি অফিসে জমা দেয়। তখন এজি অফিস বলে ব্যয় মঞ্জুরি পত্রটি ভুয়া। এসব বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগপত্রটি ঢাকায় হেড অফিসে পাঠিয়ে দেব। ঢাকা থেকে যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তিনি বলেন, চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া আছে। এর মধ্যে একজন হাসপাতালের, বাকিরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। 

এদিকে জালিয়াতির ঘটনায় তিন সদস্যরে তদন্ত কমিটি গঠন করছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়। এতে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. মো. সাখাওয়াত উল্ল্যাহকে সভাপতি ও সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সুমন বড়ুয়াকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়ছে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াচ চৌধুরীক।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলনে, তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র দেখিয়ে বিভাগীয় ট্রেজারি অফিস থেকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউও কেনার একটি বিল পাস করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে চক্রটি। বিষয়টি ট্রেজারি অফিসের কর্মকর্তাদের নজরে এলে বিলটি আটকে দেয়। ভুয়া স্মারক নম্বর দিয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বিল জালিয়াতির ঘটনায় হিসাবরক্ষক মো. ফোরকানকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

কেএম/এসকেডি