ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে প্রস্তুত করা হচ্ছে রাজধানীর আফতাব নগর অস্থায়ী পশুর হাট। হাটে পশুগুলো যেন সারিবদ্ধভাবে রাখা যায় সেজন্য নিচু জায়গায় দেওয়া হচ্ছে বালি, গর্ত করে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা হচ্ছে বাঁশের খুঁটি। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির পশু নিয়ে আসতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এখনও ক্রেতার দেখা নেই হাটে। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে হাট জমে উঠবে। 

রোববার (৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর প্রগতি সরণির মেরুল বাড্ডা এলাকা অতিক্রম করতেই দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের গরুর ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে আফতাব নগর হাটের বিশাল তোরণ। তোরণের নিচ দিয়ে ট্রাকভর্তি গরু ঢুকছে হাটে।

ভেতরে ঢুকে দেখা গেল এখনও হাটের বেশিরভাগ জায়গা ফাঁকা। অল্প সংখ্যক ব্যবসায়ী এসেছেন গরু নিয়ে। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ গরু রাখার জায়গা তৈরি করছেন, কেউ কেউ গরুকে গোসল করাচ্ছেন, খাবার দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নিজেদের জন্য খাবার রান্নায় ব্যস্ত।

অপরদিকে খামারিরা এখন জায়গা দখল নিয়ে খুঁটি ও ঘর বানাচ্ছেন। হাটে এখন পর্যন্ত যারা এসেছেন তাদের বেশিরভাগ পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও যশোর এলাকার ব্যবসায়ী।

হাট কর্তৃপক্ষ আফতাবনগর ও আশপাশের এলাকায় মাইক দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। ক্রেতা আকর্ষণে বাজারে বড় বড় গরুর আগমন ঘটেছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। 

আফতাব নগরের ব্লক এইচ এর বাসিন্দা রুশন আনোয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাটে এখনো ১০ ভাগের এক ভাগ গরু আসেনি। ঈদের এখনো এক সপ্তাহ বাকি, দেখা যাক কী হয়।

কুষ্টিয়ার মেহেরপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার রাতে ১৩টি গরু নিয়ে এসেছি। এসে দেখি আশেপাশে সব খালি, রাতে ভয়ও পেয়েছি। কাল-পরশু থেকে এসব এলাকায় পা ফেলার জায়গা পাওয়া যাবে না বলে আশা করছি।

চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ীরা নাছির উদ্দিন জানান, এবছর ২১টি গরু এনেছি। সবকটি বিক্রি করতে চাই। তিনি বলেন, সকাল থেকে এখনো কোনো ক্রেতা দরদাম করেনি। তবে আশা করছি কাল-পরশু থেকে পশু বিক্রি করতে পারব।

কুষ্টিয়ার নিজাম উদ্দিন বলেন, এখানে বাঁশ, পানির সমস্যা। পানির অভাবে গরুকে গোসল করাতে পারিনি। খুঁটির অভাবে ঘর বানাতে পারছি না। এখন বৃষ্টি এলেই সব গরু ভিজবে। 

উল্লেখ্য, এবার কোরবানির ঈদে মোট ১ কোটি ২১ লাখ পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে সরকার পক্ষ বলা হয়েছে। কোরবানির এই পশু কেনা-বেচার জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মোট ১৮ জায়গায় অস্থায়ীভাবে পশুর হাট বসানো হয়েছে। 

ঢাকা সিটির ১৮টি জায়গার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আফতাবনগর, ভাটারা (সাইদ নগর), বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং, কাওলা শিয়ালডাঙ্গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ এর খালি জায়গা, মোহাম্মদপুর বছিলার ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০০ ফুট সড়ক সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ এর খালি জায়গা এবং ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচপুরা বেপারিপাড়ার রহমান নগর আবাসিক প্রকল্প এলাকায় অস্থায়ী এই ৮টি হাট বসছে।

অপরদিকে দক্ষিণ সিটির ১০টি জায়গার মধ্যে খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী ক্লাব সংঘ মাঠ, হাজারীবাগ ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ মাঠ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসহ আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গাসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা, যাত্রাবাড়ি দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের এলাকা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, লালবাগ রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর কদমতলী ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা এবং আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গায় অস্থায়ী হাটগুলো বসছে।

এমআই/জেডএস