ঈদুল আজহাকে ঘিরে জমে উঠেছে গাবতলী পশুর হাট। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরুর পাশাপাশি আসছে খাসি। ক্রেতারা আসছেন, দাম-দর করছেন। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে এ চিত্র দেখা গেছে।

গাবতলী পশুর হাটে খাসির শেডে রাখা হয়েছে হরেক রকমের ছোট-বড় খাসি। শেডের বাইরেও রাখা হয়েছে। বিক্রেতাদের কেউ কেউ ক্রেতা দেখলেই খাসির দল নিয়ে সামনে হাজির হচ্ছেন। ‘কোনটা লবেন লন, দাম বাড়েনি, আগের দরে বেচতেছি’ বলে হাঁক-ডাক দিচ্ছেন রাখালরা। 

শেডে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল হাটে নিয়ে এসেছেন বেশ ক’জন বেপারি। তাদের মধ্যে মানিকগঞ্জের বাবুল অন্যতম। তিনি এনেছেন সাতশ খাসি। এর মধ্যে দুটি খাসি আগ্রহের কেন্দ্রে। নাম রাজা বাবু ও বাহাদুর। দুই খাসির দাম হাঁকিয়েছেন তিনি ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তবে আড়াই লাখ হলে বেচে দেবেন তিনি।

তিনি বলেন, রাজা বাবুর ওজন ১২০ কেজি। এর দাম হাঁকিয়েছি ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বেচার আশা করছি। বাহাদুরের ওজন ৭০ কেজি। দাম চেয়েছি ১ লাখ ২০ হাজার। ৮০-৯০ হাজারে বেচার আশা  করছি।

ওজন ও  আকার অনুযায়ী কয়েকটি খাসির দাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি সাতশ ছাগল আনছি। ২০ কেজি থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত। পাইকারিতে বেচতেছি। এখনো জমেনি। গত বছর তো ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই বেশ ভালো বেচাকেনা করেছি। এবার সেরকম তো কিছু দেখছি না। আশা করছি। কিন্তু কখন কবে জমবে, পুরোদমে  তা বলা যাচ্ছে না।

মানিকগঞ্জের রওশন আলী বেপারী গাবতলী পশুর হাটের স্থায়ী বেপারী। সারা বছরই ব্যবসা করেন এ হাটে। এবারও ঈদকে ঘিরে মানিকগঞ্জ থেকে তিনশ ছাগল নিয়ে এসেছেন হাটে। তিনি বলেন, গত বছর আড়াইশ  ছাগল বিক্রি করেছি। একশ ছাগল ফেরত নিয়ে গিয়েছিলাম। এবার কী হবে জানি না। এখনো ক্রেতা সমাগম তেমন হয়নি।

তিনি বলেন, আমার এখানে খাসি ছাড়াও আছে ভেড়া ও গাড়ল। ৭০ কেজির একটি গাড়ল আছে। দাম চাচ্ছি ৯০ হাজার টাকা। ৭০ হাজার হলে বিক্রি করে দেব।

হাট ঘুরে দেখা যায়, গত ৪-৫ দিনের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে পশুর সংখ্যা। শেড বেড়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী শেডও, যেখানে রাখা হচ্ছে বড় বড় সব গরু। ক্রেতাও কম-বেশি আসছেন। বিকেল ও সন্ধ্যা নাগাদ ক্রেতা সমাগম বাড়ছে। টুকটাক বেচা-বিক্রিও শুরু হয়েছে।

হাটে উঠেছে দুম্বাও। তবে উঠের দেখা এখনও মেলেনি। গরু কেনায় আগ্রহীরা গরু দেখায় ব্যস্ত। খাসির শেডে দেখা গেছে নারী ক্রেতাও।

রাজধানীর সবচেয়ে বড় ও একমাত্র স্থায়ী এ পশুর হাটে প্রায় ৪০ বছর ধরে পশুর ব্যবসা করা আমজাদ হোসেন এবারও এনেছেন খাসি ও দুম্বা। তিনি বলেন, গাবতলী হাটে আমার দুটি শেড। গরু রয়েছে দুইশ। রয়েছে ১২ থেকে ১৫ মন ওজনের মহিষও, দুম্বাও এনেছি। উট বিদেশ থেকে আনার প্রস্তুতিও চলছে।

একেকটি দুম্বার ওজন দুই থেকে দেড় মণ। দাম চাইছেন লাখ থেকে সোয়া লাখ টাকা। মহিষ বিক্রি হলেও দুম্বা বিক্রি করতে পারেননি তিনি।

জেইউ/আরএইচ