নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট বাতিল করতে হবে : ববি হাজ্জাজ
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। কারণ নির্বাচনে সরকারি দলের প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করতে পারে না।
রোববার (১৭ জুলাই) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক সংলাপের প্রথম বৈঠকে এ দাবি জানায় দলটি। সকাল সাড়ে ১০টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এনডিএম’র সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়। এনডিএম’র চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইসির সংলাপে অংশ নেয়। অন্যদিকে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ চার কমিশনার ও ইসির কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
পোলিং এজেন্ট ব্যবস্থা বাতিল প্রসঙ্গে ববি হাজ্জাজ বলেন, বিগত কয়েকটি ভোটে আমরা দেখেছি সরকারি দল ছাড়া অন্য দলের এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে না। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এ বিষয়ে প্রায় প্রতিটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। স্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের প্রস্তাবনা হলো পোলিং এজেন্ট নিয়োগের ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।
তিনি বলেন, বিকল্প হিসেবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষ ছাড়া বাকি এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনতে হবে। এই সিসিটিভির লাইভ ফুটেজ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দেখার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। এসময় দলটি নির্বাচনকালীন সময়ে কমিশনকে জনপ্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি জানায়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ইতিহাস বলে গণতন্ত্রের অপমৃত্যু হবে, স্বৈরতন্ত্র মাথা জাগিয়ে তুলবে
দলটির যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমিন বলেন, জনগণ প্রত্যাশা করে নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয় ‘সুপার প্রাইম মিনিস্টার’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জনপ্রশাসনকে নিরপেক্ষ এবং পেশাদারভাবে কাজ করতে প্রয়োজনীয় অনুশাসন প্রদান করবেন। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের গোপন তালিকা থেকে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, তথ্য এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব নতুনভাবে নিয়োগ করতে হবে। রাজনৈতিক দল এবং অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন জনপ্রশাসনের এই গোপন তালিকা তৈরি করবে। এছাড়াও এই তালিকা থেকে প্রয়োজন অনুসারে বা রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনার পরিবর্তন করতে হবে।
এসময় তিনি ইভিএম ব্যবহারে পেপার অডিট ট্রেইল সংযুক্ত করা ও একাধিক দিনে ভোট করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ৩০০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সক্ষমতা রয়েছে বলে আমরা মনে করি না। তথাপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি ইভিএম ব্যবহার করা হয় সেক্ষেত্রে আমরা ডিজিটাল পেপার অডিট ট্রেইল ব্যবহারের পাশাপাশি পেপার অডিট ট্রেইল সংযুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, একজন ভোটারের দেওয়া ভোটটি ইভিএম মেশিনের মেমোরিতে সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়েছে কি না সেটা নিশ্চিত করতে ইসি সাংবিধানিকভাবে দায়বদ্ধ।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতে চোর না ডাকাত হবো বলতে পারবো না : সিইসি
এনডিএমের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— অবাধ রাজনৈতিক চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা, নির্বাহী বিভাগ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ না দেওয়া, নির্বাচনকালে গণমাধ্যম বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা, ভোটের আগেই আসনভিত্তিক সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা, জেলাপর্যায়ে শক্তিশালী নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গঠন করা, রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার বন্ধ করা, বিদেশি পর্যবেক্ষকসহ নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ টিমকে অনুমতি দেওয়া, নির্বাচনী ব্যয়সীমা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা ও প্রচারকালে প্রতিটি বিভাগে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা।
এসআর/এসএসএইচ