দিনব্যাপী চার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করতে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ১৭ জুলাই থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি।
প্রথমদিন চারটি দলকে আমন্ত্রণ জানালেও ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি বিএনপিপন্থি বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)। এ একটি দল ছাড়া প্রথমদিন তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। এরপর সোমবার (১৮ জুলাই) আরও চারটি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে আউয়াল কমিশন।
বিজ্ঞাপন
ইসির ধারাবাহিক সংলাপ অনুযায়ী আজকেও চারটি দলের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আজকে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সঙ্গে সাড়ে ১০ থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সংলাপ শুরু করবে ইসি। এরপর ইসলামী ঐক্য জোটের সঙ্গে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সঙ্গে ৪টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ইসির সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন : ওবায়দুল কাদেরকে ‘স্যার’ বলা ঠিক হয়নি : সিইসি
বিজ্ঞাপন
এর আগে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছিলেন, ১৭ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় প্রতিদিনই চারটি করে দলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিএনপির সঙ্গে যেদিন বসবে সেদিন তিনটি দল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে যেদিন বসবে সেদিন দুটি দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি দল ১০ জন করে সদস্য নিয়ে বৈঠকে অংশ নিতে পারবে।
এদিকে অনুষ্ঠেয় সংলাপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি-জাপা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জন্য দুই ঘণ্টা করে সময় বরাদ্দ রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অন্য ৩৬টি নিবন্ধিত দলের জন্য রাখা হয়েছে ১ ঘণ্টা করে সময়।
কোন দলের সঙ্গে কবে সংলাপ
প্রথমদিন অর্থাৎ ১৭ জুলাই সংলাপে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ কংগ্রেস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)। এই চারটি দলের মধ্যে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) বাদে বাকি তিনটি দল উপস্থিত ছিল।
সোমবার (১৮ জুলাই) বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি।
আজ ১৯ জুলাই মঙ্গলবার বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ২০ জুলাই সময় পেয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
২১ জুলাই পেয়েছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ ও গণফ্রন্ট।
২৪ জুলাই সময় পেয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ও ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ।
২৫ জুলাই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি।
২৬ জুলাই জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি অংশ নেওয়ার জন্য সময় পেয়েছে।
২৭ জুলাই সময় পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাকের পার্টি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।
২৮ জুলাই রয়েছে গণফোরাম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
৩১ জুলাই তালিকায় আছে জাতীয় পার্টি-জাপা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে আগস্টে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেছিল তৎকালীন কেএম নূরুল হুদা কমিশন। এবার একই পথ ধরে সংলাপ শুরু করছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।
সে সময় ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। এক্ষেত্রে বেশির ভাগ দিন সকাল-বিকেল দু’টি করে দলের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে যে দু’দিন বসেছিল, সেদিন আর কোনো দলের সঙ্গে সংলাপ করেনি নির্বাচন কমিশন।
ইসির সঙ্গে সে সময় ৩৯টি দলই সংলাপে অংশ নেয়। এদের মধ্যে বেশিরভাগ দল সেনা মোতায়েনের পক্ষে এবং বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিপক্ষে ও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ভোটগ্রহণ না করার সুপারিশ করে।
সংলাপের মতামত পর্যালোচনা করে দু’টি অংশে ভাগ করে একটি অংশকে নিজেদের বাস্তবায়নযোগ্য মনে করে ইসি, যেদি তাদের কাছেই রাখে। অন্য অংশটি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত হওয়ায় ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়।
এসআর/এসএম