নড়াইলে ‘ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকারী পোস্ট দেওয়ার’ কথিত অভিযোগে লোহাগড়া উপজেলার একটি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। 

আরও পড়ুন>> নড়াইলের ঘটনা আবেগে ঘটেছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এই ঘটনায় কারা দায়ী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে কারা দায়ী, এটা তো আপনারা পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়ায় দেখেছেন। এর আগেও অ্যারেস্ট হয়েছে, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। বিচারে যা হয়, তাই হবে। আমরা চাই যারাই করুক না কেন, সে যেই হোক না কেন, যে ধর্মের হোক বা যে গোত্রের হোক, প্রকৃতপক্ষে যে অন্যায় করেছে তার শাস্তি হবে, ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, আমি সেখানে ১৫ তারিখে গিয়েছিলাম। এরপর ১৯ তারিখে গিয়েছিলাম। আমার দৃষ্টিতে আমি মনে করছি ঘটনা যাই ঘটুক না কেন, ঘটবে কেন? এটা হলো আমার প্রশ্ন। যা ঘটেছে সেটা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা তাৎক্ষণিক সেটা প্রটেকশন দিয়েছিল বলে সেখানে মারাত্মক এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, যেটুকু ঘটেছে এটা সাধারণভাবে যা হয়ে থাকে তাই হয়েছে। 

পরাজিত শক্তি এখনো রয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজীবনভর তারা কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কার্যক্রম বা অঘটন ঘটাচ্ছে। তারা চায় ১২ বছরের এই অগ্রযাত্রাকে কীভাবে বিনষ্ট করবে। তারা মনে করেছে এই সরকার হয়ত আরো অনেকদিন থাকবে, এটা হলো তাদের মনের জ্বালা। তারা কীভাবে দেশে একটি অরাজকতা সৃষ্টি করে অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে এবং এই দেশে যাতে সুন্দর-সুষ্ঠু নির্বাচন হয়ে আগামীতে সরকার না আসতে পারে, সেজন্য অতীত থেকে শুরু করেছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড। এটি তাদের আসল ইচ্ছা। 

আরও পড়ুন>> নড়াইলে গ্রেপ্তার পাঁচজনের ৩ দিন করে রিমান্ড

তিনি বলেন, তারা চাইছে এই দেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে না থাকুক। তারা চাইছে এই দেশটাকে অতীতে ২১ বছর যেভাবে চালিয়েছিল, সেভাবে, সেই চিন্তায় নেওয়ার জন্য পাকিস্তানি কায়দায় বা আফগানিস্তানের কায়দায় হোক, এই ধরনের চিন্তা-চেতনা মাথায় নিয়ে তারা কাজ করছে বিধায় আজকে কিন্তু এই অবস্থা। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন সন্নিকটে। এই নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্যই মাঝে মাঝে কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোক এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। আমরা অবশ্যই সরকারের পক্ষ থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করছি, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে, ওনার নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে সেগুলোকে মিনিমাইজ করার জন্য। আমরা সেখানে গিয়েছি, সেখানে দেখে এসেছি তাদের সঙ্গে ধর্মীয় সংলাপ করেছি। 

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, জনগণ-সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নিয়ে বিশেষ করে আমাদের সুশীল সমাজ, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরাও সেখানে ছিলেন। তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। তাদের কথা শুনেছি। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আজকে সেই জায়গায় যে ধরনের পরিস্থিতি মানুষ চিন্তা করেছিল, তেমন কোনো পরিস্থিতি নেই। এখন অনেকটা শান্ত। আহতদেরকে সাহস যোগানো দরকার। আমরা সেটুকুই এখন করছি। 

এসএইচআর/জেডএস