নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযানে যায়। অভিযানকালে কারা অভ্যন্তরে প্রবেশ করে অনেক সময়েই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার প্রমাণ পেতেও দেখা গেছে।

তবে এখন থেকে অভিযানে যেতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতের লিখিত অনুমতি নিতে হবে। এছাড়াও বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

গত ১২ জুলাই কারা মহাপরিদর্শক (আইজি, প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক সই করা চিঠি দেশের কারা অধিদপ্তরসহ সব জেলা প্রশাসক ও কারা কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এ চিঠির কপি ঢাকা পোস্টের কাছে রয়েছে। 

চিঠির বিষয় ছিল, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের টিম কারাভ্যন্তরে প্রবেশ প্রসঙ্গে’

এতে বলা হয়েছে, কারাগার একটি স্পর্শকাতর ও সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান। যা কারা বিধি ও সরকার কর্তৃক জারি করা অন্যান্য বিধি-বিধান দ্বারা পরিচালিত হয়। কারা বিধি মোতাবেক যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কোনো ব্যক্তির কারাগারে প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। কারাগারগুলোতে অনেক সময় কোনরূপ পূর্বানুমোদন/সমন্বয় ছাড়া তদন্তের উদ্দেশ্যে দুদকের বিভিন্ন টিম আগমন এবং প্রবেশ করেন।

এ বিষয়ে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে দুদক সচিবের টেলিফোনিক আলোচনা হয়। সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে কারাগারের স্পর্শকাতরতার বিষয়টিকে বিবেচনায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

নির্দেশনাগুলো হলো- যে জেলার কারাগারে যাবেন সেই জেলার বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের লিখিত অনুমতি পত্র, সংশ্লিষ্ট কারাগারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কপি, আগত টিমকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া সংক্রান্ত যথাযথ কর্তৃপক্ষের আদেশ এবং আগমনকারী কর্মকর্তার পরিচয়পত্র। 

এখন থেকে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট বা অন্য যে কোনো টিম কারাগারে কোনো তদন্তের জন্য গেলে ওই প্রমাণপত্রগুলো আবশ্যিকভাবে প্রদর্শন করতে হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে মোবাইল ফোন ব্যবহারসহ বন্দিদের অবৈধ সুবিধা দেওয়া, বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়, অসুস্থ না হয়েও অনেক বন্দির হাসপাতালে ভর্তি থাকা, কারা ক্যান্টিনে খাবারের দাম বেশি রাখা, বন্দিদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আসে দুদকে। এ ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন কারাগারে তাৎক্ষণিক অনেক অভিযান চালিয়েছে। অনেক সময়েও অনিয়মের সত্যতা মিলেছে।

চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা কারা অধিদপ্তরের ডেপুটি জেলার (প্রশাসন) মো. রুস্তম আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুদক ও কারা অধিদপ্তরের মধ্যে যাতে কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সে কারণেই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুদক সচিবের সঙ্গে আলাপ করেই আমাদের কর্তৃপক্ষ এমন নির্দেশনা ইস্যু করেছে।

আরএম/এসএম