ঢাকা পোস্টের কক্সবাজার প্রতিনিধির সঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু যেভাবে কথা বলেছেন, ‘সেভাবে কারো সঙ্গে বলা যায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। 

সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চালচলন, আচার-আচরণ, ব্যবহার এটা তো সাংবাদিকের বিষয় না। কারো সঙ্গে আপনি এভাবে কথা বলতে পারেন না। আপনি যত উপরের দিকে থাকবেন, তত মাথা ঠান্ডা রেখে কথা বলতে হবে।’

তিনি  বলেন, ‘গতকাল আমরা কমিশনার কনফারেন্সে খুব স্ট্রংলি কমিশনারদের বলে দিয়েছি, কমিশনাররা যে জেলায় যাবেন, সব অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে বসবেন।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরুকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। 

গত ২১ জুলাই ‘নিচু জায়গায় নির্মাণ করা উপহারের ঘর পানিতে ভাসছে’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা হোয়াব্রাং এলাকার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সবগুলো নতুন ঘর পানিতে ভাসছে। ফলে সেখানে থাকা ২৭টি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

এ খবর প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি তার অফিসিয়াল নম্বর থেকে ঢাকা পোস্টের কক্সবাজার প্রতিনিধি সাইদুল ফরহাদকে কল করে ধমক দেন এবং গালিগালাজ করেন।

এ ফোনালাপের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে তীব্র সমালোচনা হয়।

পরদিন শুক্রবার (২২ জুলাই) কক্সবাজারের হিলডাউন সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের উদ্যোগে কক্সবাজার প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কায়সার খসরু ঢাকা পোস্টের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধির কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।

এ ঘটনায় গতকাল রোববার উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ও আপত্তিকর। কোনো রং হেডেড ব্যক্তি ছাড়া এ ধরনের ভাষা কেউ ব্যবহার করতে পারেন না।

এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আদালতকে তা জানাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এসএইচআর/আরএইচ