রেলের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আন্দোলনরত মহিউদ্দিন রনি ২০তম দিনে এসে তার ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী বরবার স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তিনি। 

সোমবার (২৫ জুলাই) বিকেল চারটার দিকে তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যান। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

স্মারকলিপি গ্রহণ করে সায়েম খান বলেন, আমাদের দল এবং দলের বাইরে কোনো আবেদন যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে থাকে, সেটি এখানে জমা দিলে আমরা তাকে সরবরাহ করে থাকি। মহিউদ্দিন রনি রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি স্মারকলিপি আমাদের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর দিয়েছেন। আমরা তাকে আশ্বস্ত করতে চাই এই স্মারকলিপিও আমাদের নেত্রী বরাবর পৌঁছে দেব।

মহিউদ্দিন রনি বলেন, আমার যতটুকু সুযোগ ছিল আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আজ সুযোগ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার, সেটি দিলাম। নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী একটা আশ্বাস দেবেন। রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে আমার এবং সারা দেশের মানুষের যে ছয় দফা দাবি সেটি যেন অবিলম্বে বাস্তবায়ন হয়। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি পড়লে এই ছয় দফা দাবির বাস্তবায়ন হবে।

গতকাল রোবাবর (২৪ জুলাই) তার এই আন্দোলনকে সমর্থন দিতে কমাপুর যান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর।

এর মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী রনিকে নিয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাকে স্টেশনে ঢুকতে দেয়নি রেলওয়ে পুলিশ। পরে তিনি সেখানেই অবস্থান শুরু করেন। এই অবস্থা দেখে রাত ৯টার দিকে সেখানে যান জোনায়েদ সাকি এবং ১০টার কিছু সময় পরে যান নুরুল হক নুর। তবে তারা কেউই রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ পাননি। সাক্ষাৎ না পেয়ে রাত ১১টার দিকে তারা ফিরে আসেন।

রেলওয়েতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলনকারী মহিউদ্দিন রনির দাবিগুলো হচ্ছে- টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজ ডট কমের যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা এবং হয়রানির ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করা; অনলাইনে কোটায় টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করতে হবে, সেই সঙ্গে অনলাইন-অফলাইনে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা; যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা; ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বৃদ্ধি করা এবং ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

এমএইচএন/জেডএস