ডিজিটাল বাংলাদেশের বর্তমান পর্যায়ে ই-ভোটিং পদ্ধতি অবশ্যই বাস্তবায়ন করা উচিত বলে মনে করে জাকের পার্টি। এ জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অ্যাপের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছে দলটি।  

বুধবার (২৭ জুলাই ) রাজধানী নির্বাচন কমিশন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে এ দাবি জানান দলটির ৯ প্রতিনিধি। এ সময় সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ছাড়াও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে চারটি প্রস্তাব দেয় জাকের পার্টি। প্রস্তাবগুলো হলো,

১. অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা 

অবাধ ও উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানে গণতন্ত্রের গতিশীল ধারা ও অনুকূল পরিবেশের বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছু সময় আগে গণতন্ত্র ও অনুকূল পরিবেশ বিষয়ে কথা বলা যুক্তিসংগত হবে না। নির্বাচনের ৬ মাস আগে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানিমূলক আচরণ যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

২. অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্লক চেইন টেকনোলজি এবং ই-ভোটিং

নির্বাচনে ভোটদান প্রক্রিয়ায় ইভিএমের কথা বলা হচ্ছে। বলতেই হয়, ইভিএম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা প্রশংসনীয়। যারা ইভিএম প্রক্রিয়ার সঙ্গে কাজ করছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ। কিন্তু ইভিএম পুরো নিশ্ছিদ্র বা নিরাপদ নয়। মনে রাখতে হবে, সবাই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি নয়। কাজেই যারা ইভিএম টেকনোলজি তৈরির কাজ করছেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির কেউ যদি এর ভেতরে প্রবেশ করে টেকনোলজির সুক্ষ্ণ পরিবর্তন ঘটিয়ে দেয়, তাহলে নৌকায় ভোট দিলে তা ধানের শীর্ষে বা অন্য প্রতীকে গিয়ে গণনা হবে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। তাই ইভিএম পুরো নিরাপদ নয়। নির্বাচনের সময় যেভাবে ভোট কেন্দ্র দখলে হানাহানি, মারামারি, আহত কিংবা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে, তা স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়া উচিত। ভোট গ্রহণে বা নির্বাচনে দেশবাসীর রক্ত ঝরবে, নিহত হবে- তা কোনোভাবেই সুখকর সংবাদ হতে পারে না। 

তাই নির্বাচনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে ব্লক চেইন প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ই-ভোটিং প্রক্রিয়ায় ঘরে বসে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এখনই গ্রহণ করা উচিত। তা না হলে, ভোটদানকে কেন্দ্র করে এ ধরনের হানাহানি, মারামারি ও দুঃখজনক হত্যাকাণ্ড ঘটতে থাকবে।

৩. সরকারি প্রচার মাধ্যমে সমঅধিকার

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সরকারি প্রচার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর নিজ নিজ দলের কর্ম পরিকল্পনা ও বক্তব্য তুলে ধরার সমান সুযোগ দিতে হবে। যাতে দেশবাসীর সামনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে সকল দলের সমঅধিকার নিশ্চিত হয়। এতে জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে আরও ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হবে।

৪. নিবন্ধিত দলগুলোর ডাটাবেজ তৈরির আহ্বান

নিবন্ধিত দলগুলোর স্ব-ঘোষিত ভোটারদের ডাটাবেজ তৈরি এবং তা প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনে জমাদান নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছু দলগুলোর ভোটের আগে গভীর আশা আর ফলাফলের পরে তীব্র অসন্তুষ্টির অবসানে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ দলের সদস্য ও সমর্থক ভোটারদের ছবি ও স্বাক্ষর সম্বলিত ডাটাবেজ তৈরি করার আহ্বান জানাবে। এতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ দলের ডাটাবেজ তৈরি করবে এবং নির্বাচন কমিশনেও তা জমা দেবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ৬ মাস আগে এই ডাটাবেজ অ্যাপসের মাধ্যমে জনগণের কাছে প্রকাশ করবে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর ভোট ব্যাংক সম্পর্কে আগে থেকেই জানা হয়ে যাবে।

এসআর/এসকেডি