ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন।

শনিবার (৩০ জুলাই) শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে 'জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হোক’ শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে এ দাবি জানানো হয়।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাই স্কুল, ছায়াতল বাংলাদেশ, দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশ, কারফ্রি সিটিস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইউথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে সংকটে ভুগছে দেশের জ্বালানি খাত, ফলে স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকার জ্বালানি সাশ্রয়ে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখা, সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির তেলের বরাদ্দ হ্রাস, একই গাড়িতে একাধিক কর্মকর্তার অফিস যাতায়াতে উৎসাহিত করাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে। সম্প্রতি এলজিআরডি থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে অফিসের বাসে যাতায়াতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় সামগ্রিকভাবে নগরীতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং হেঁটে ও সাইকেলে যাতায়াতের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন সম্ভব বলে আমরা মনে করি।

বক্তারা আরও বলেন, শুধুমাত্র জ্বালানি অপচয় নয়, ব্যক্তিগত গাড়ির বেশি ব্যবহারের ফলে যানজট, শব্দ ও বায়ুদূষণ, দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন সমস্যা বৃদ্ধি পায়। অধিক জ্বালানি খরচের মাধ্যমে নগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জলবায়ু বিপর্যয়ের আশঙ্কাও বেড়ে চলেছে। ব্যক্তিগত গাড়ির পার্কিং সুবিধা দিতে গিয়ে হেঁটে যাতায়াত, সামাজিকীকরণের সুযোগ থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। জনগণের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সামগ্রিকভাবে নগর যাতায়াতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। ঢাকা শহরে অধিকাংশ মানুষ হেঁটে যাতায়াত করে থাকেন। তাদের সুবিধার কথা বিবেচনায় হাঁটা, সাইকেল ও গণপরিবহনে যাতায়াতের নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা আবশ্যক।

মানববন্ধন থেকে বক্তারা ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা; স্বল্প দূরত্বে হেঁটে, সাইকেলে ও রিকশায় যাতায়াতের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করা; যাতায়াতের ক্ষেত্রে গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা করা; পথচারীর উপযোগী করে ফুটপাত নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা; সপ্তাহে একদিন ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার পদক্ষেপ গ্রহণ করা; ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আমদানি কর বৃদ্ধি সহ বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।

প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মাহবুবুল হক, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তাহাজ্জোত হোসেন, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এমএ মান্নান মনির, ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম নুরুল ইসলাম, দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশের পলিসি অফিসার আনম মাছুম বিল্লাহ ভুঁঞা প্রমুখ।

এএসএস/জেডএস