বাংলাদেশের নেটওয়ার্কের মানদণ্ড নিয়ে ওকলা ও ওপেন সিগনালের প্রতিবেদনকে গ্রাহক বিভ্রান্তির অপচেষ্টা বলে মনে করছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। 

সংগঠনটি জানায়, সার্বিক বিবেচনায় ওপেন সিগনালের এ রিপোর্ট গ্রহণযোগ্য নয়। ওপেন সিগনাল একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সরকারের অনুমোদন ছাড়া তাদের এ ধরনের রিপোর্ট দেওয়ার অধিকার নেই। ওপেন সিগনাল গ্রামীনফোনকে সেরা নেটওয়ার্কের একটি সার্টিফিকেট দিয়েছে অথচ সরকার নেটওয়ার্ক জটিলতার কারণে গ্রামীনফোনকে সিম বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।

রোববার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংগঠনটি এ কথা জানায়।

সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছর আমরা দেখেছি ওকলা প্রতিবেদন দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ বিশ্বে সেবার মানদণ্ডে পিছিয়ে পড়া দেশ। যা ১৩৯টি দেশের মধ্যে ১৩৭তম। আপনারা জানেন, গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর গ্রামীণ ফোনের সেবার মান সর্বনিম্ন ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তাদেরকে নতুন করে সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দু’দিন আগে আমরা দেখলাম হংকংয়ের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ওপেন সিগন্যাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংককে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, আমাদের প্রশ্ন গ্রাহকদের তথ্য অধিকার নিশ্চিত না করে সরকারের সঙ্গে কোন প্রকার চুক্তি বা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের জবাবদিহিতার বাইরে থেকে এ ধরনের একটি প্রত্যয়ন পত্র কীভাবে প্রদান করল প্রতিষ্ঠানটি তা আমাদের বোধগম্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর প্রকৌশলী মো. আবু সালেহ। প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী প্রচুর অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যার মাধ্যমে মোবাইল সেবার মান পর্যালোচনা করা যায় এবং তারা অনেক র‌্যাঙ্কিং করে থাকে, তবে এসব আ্যপ তাদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা কখনই পায়নি। এ সকল আ্যপ তাদের কার্যক্রম বাণিজ্যিক স্বার্থে করে থাকে। অর্থাৎ তাদের এরূপ রিপোর্ট স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্যিক বিষয় দ্বারা প্রভাবিত।

গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলো হলো।

১. এসব রিপোর্ট খুব সহজেই গ্রাহকে বিভ্রান্ত করে এবং তাদের সেবা ব্যবহারকে প্রভাবিত করতে পারে। কাজেই এরূপ অবস্থা হতে গ্রাহকদের সুরক্ষা দিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

২. গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা করে বিটিআরসি ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

৩. গ্রাহককে তার সেবা পছন্দে বিভ্রান্ত করে এমন কোন রিপোর্ট প্রকাশ থেকে বিরত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি। বিটিআরসি কর্তৃক কোন রিপোর্টের যাচাই বাছাই ও অনুমোদন ছাড়া এরূপ রিপোর্টের প্রচার করা নয়।

৪. বিটিআরসি কর্তৃক পরিচালিত ড্রাইভ টেস্টকে আরও সার্বিকভাবে দেশব্যাপী একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর পরিচালনা করে জনগণকে অবগত করার সুপারিশ করছি। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আবু বক্কর সিদ্দিক, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাড. সাহেদা বেগম ও মিতা রহমান, প্রচার সম্পাদক শেখ ফরিদ, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু প্রমুখ।

আইবি/আইএসএইচ