ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনসহ পেট্রোল-অকটেনের দাম বাড়িয়েছে সরকার। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির খবর পাওয়ার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পেট্রোল পাম্প বন্ধ করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। 

এ পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয়সহ সব ধরনের দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি এবং দেশে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা করছেন পাম্পে তেল নিতে আসা  সাধারণ গ্রাহকরা। তাদের শঙ্কা, কাল (শনিবার) থেকেই হয়তো সবকিছুরই দাম দ্বিগুণ হবে। এ পরিস্থিতিতে তাদের কী হবে?

শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে রাজধানীর মতিঝিল এলাকার করিম অ্যান্ড সন্স নামক এক পাম্পে তেল নিতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক চাকরিজীবী বলেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম লিটারে ৪৬ টাকা আর পেট্রোলের দাম লিটারে ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে কার্যকর হলো তেলের বাড়তি দাম

তিনি বলেন, এক লিটার ডিজেল ও কেরোসিন কিনতে লাগবে ১১৪ টাকা। এ ছাড়া এক লিটার অকটেনের জন্য দিতে হবে ১৩৫ টাকা। আর প্রতি লিটার পেট্রোল ভোক্তা পর্যায়ে কিনতে হবে ১৩০ টাকায়।

তেল প্রত্যাশী এ ব্যক্তি বলেন, ৩০ মিনিটের ব্যবধানে জ্বালানি তেলের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়া, পাম্পগুলোতে সংকট তৈরি হওয়া, এটা কিন্তু ভালো দেখা যাচ্ছে না। সামান্য তেল নিয়েই যদি এ রকম হয়, তাহলে তো কাল থেকে দেখা যাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, মাছ, সবজিসহ সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে। গাড়ির ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যাবে। তখন সাধারণ মানুষ কীভাবে চলবে? সাধারণ মানুষ কী খাবে? কোথায় যাবে?

আরও পড়ুন: অকটেন ১৩৫, পেট্রোল ১৩০ টাকা

দ্রব্যমূল্য লাগামহীন হবে -এমন শঙ্কা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দেখা যাবে, আজ রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় আসা মাছ, মাংস, সবজির দাম সকালেই দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা যুক্তি দেবেন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। তাদের কিছু করার নেই। এ অবস্থায় আমরা সাধারণ মানুষ কী খাব? কীভাবে চলব? এদেশে আমাদের বাঁচার উপায় কী?

তেল নিতে কতক্ষণ আগে এখানে এসেছেন-  জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা আগে এসেছি। এরও আগে মানুষ টের পেয়ে গেছে। আমরা তো ফেসবুকে দেখলাম তেলের দাম বাড়াচ্ছে। সরকার তেলের দাম বাড়াবে, বাড়াক। কিন্তু এত বেশি বাড়াবে, এটা তো হয় না। এটা অনেক বেশি। অবশ্যই সবাইকে ওয়ার্নিং দিয়ে তারপর বাড়ানো উচিত ছিল।

আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির খবরে রাজধানীতে পাম্প বন্ধ

শুক্রবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য ভোক্তা পর্যায়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভেতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, লিটারপ্রতি অকটেন ১৩৫ টাকা ও লিটারপ্রতি পেট্রোল ১৩০ টাকা হবে। 

এতদিন কেরোসিন ও ডিজেল প্রতি লিটার ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা প্রতি লিটার ও পেট্রোল ৮৬ টাকা প্রতি লিটারে বিক্রি হচ্ছিল।

টিআই/আরএইচ