বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (ইআরএল) পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয় করা ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভেতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ডিজেল ১১৪ টাকা প্রতি লিটার, কেরোসিন ১১৪ টাকা প্রতি লিটার, অকটেন ১৩৫ টাকা প্রতি লিটার ও পেট্রোল ১৩০ টাকা প্রতি লিটার করে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বৃদ্ধির খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর পাম্পগুলোতে বাড়তে থাকে মোটরসাইকেল চালকদের ভিড়। জালানি না পেয়ে মোটরসাইকেল চালকরা অনেক পাম্পে উত্তেজিত হয়ে যান। জ্বালানি বিক্রির জন্য পাম্পগুলোর সামনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা।

এ অবস্থায় রাজধানীর পাম্পগুলোতে ক্রেতাদের বিক্ষোভ-উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে মধ্যরাতে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেই লক্ষ্যে প্রতিটি পাম্প ঘিরে রেখেছেন পুলিশ সদস্যরা।

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে কার্যকর হলো তেলের বাড়তি দাম

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাম্পগুলোতে রাত ১১টার পর সরেজমিনে দেখা যায়, অকটেন ও পেট্রোলের দাম বাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মোটরসাইকেল চালকরা ভিড় জমাতে থাকেন পাম্পগুলোতে। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে রাজধানীর সব পাম্পে হঠাৎ জ্বালানি বিক্রি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, বাড়তি দামে বিক্রি করার জন্য নানা অজুহাতে পাম্পগুলো জ্বালানি বিক্রি বন্ধ করেছে।

অন্যদিকে রাত ১২টার পর থেকে নতুন বাড়তি দামে অকটেন, পেট্রোল ও ডিজিল বিক্রি শুরু হলেও জনপ্রতি ১-২ লিটারের বেশি জ্বালানি বিক্রি করছে না পাম্প কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি বিক্রি না করায় ও ধীর গতিতে বিক্রি চলায় রাজধানীর প্রতিটি পাম্পে মোটরসাইকেল চালকদের লম্বা ভিড় দেখা দেয়। মধ্যরাতে পাম্পে লম্বা লাইনে চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি না পাওয়ায় পাম্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা যায় বাইক চালকদের। আবার অনেক পাম্পে উত্তেজিত মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ করেন মূল্যবৃদ্ধি ও জ্বালানি না পাওয়ায়।

পাম্পে পাম্পে এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

রাত সাড়ে ১১টার পর দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালকদের বিক্ষোভ-উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যরা প্রতিটি পাম্প ঘিরে রেখেছেন। পুলিশ সদস্যরা প্রতিটি পাম্পে উত্তেজিত মোটরসাইকেল চালকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ও রাস্তার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ কাজ করছেন।

আরও পড়ুন: অকটেন ১৩৫, পেট্রোল ১৩০ টাকা

এছাড়া পাম্পগুলোতে পোশাক পরা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ওয়াকিটকি হাতে নিয়ে প্রচুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পর পাম্পগুলোতে মোটরসাইকেল চালকদের ভিড় হতে থাকে। এ অবস্থায় যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই লক্ষ্য রাজধানীর বিভিন্ন থানার নাইট টহল টিমগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয় স্থানীয় পেট্রোল পাম্পগুলোতে দায়িত্ব পালনের জন্য। আর পাম্পগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে রাত ১২টা থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ পান ডিএমপির বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক মো. সাইফুল। তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর আসে রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে পাম্পটিতে মোটরসাইকেল চালকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ফলে লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয় এবং রাস্তায় যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হয়। যানজটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং পাম্পে যেন স্বাভাবিকভাবে জ্বালানি তেলের কেনাবেচা চলে সেজন্য আমরা এখানে দায়িত্ব পালন করছি।

এমএসি/এসএসএইচ