রাজধানীর উত্তরায় নারী-শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের নামে অফিস খুলে বিভিন্ন পত্রিকায় নামিদামি প্রতিষ্ঠানে আকর্ষণীয় বেতনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিত একটি চক্র। লোভনীয় বেতনের চাকরির ফাঁদে শিক্ষিত-বেকাররা যোগাযোগ করলেই শুরু হতো প্রতারণা। চাকরি বাবদ জামানত ও দামি ল্যাপটপ, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করত চক্রটি।

এমন প্রতারণার অভিযোগে চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার রাতে উত্তরার দক্ষিণখান থানার আশকোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, চক্রের প্রধান মো. মজিবুর রহমান (৪২), তার দুই নারী সহযোগী লাবনী আক্তার (২৩) ও জান্নাতুল ফেরদৌস ময়না (২০)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১৪টি মোবাইল, বিভিন্ন কোম্পানির ৬০টি সিম কার্ড, চাকরিপ্রার্থীদের ৪০টি জাতীয় পরিচয় পত্র, ১৪৮টি বায়োডাটা ও ৩০টির বেশি ভুঁইফোড় কোম্পানি/এনজিওর নামে তৈরি করা নিয়োগপত্র ও রাবার স্ট্যাম্প সিল জব্দ করা হয়।

বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সাইবার ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) রেজাউল মাসুদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, উত্তরায় নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নামে একটি অফিস খুলে বিভিন্ন পত্রিকায় ভুঁইফোড় কোম্পানির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিত চক্রটি। সেখান থেকে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ করত তারা।

এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষিত ও বেকার অসংখ্য যুবক প্রতারিত হয়েছে। এ বিষয়ে সাইবার পুলিশ সেন্টারে (সিপিসি) একটি অভিযোগ আসলে, অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের প্রধান মজিবুর রহমান জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে প্রায় ২৫ হাজার চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে চক্রটি। চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মজিবুর। এর আগে চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগে মুজিবুর বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হয়েছিল। জামিনে বের হয়ে এসে একই কাজ করে আসছিলেন।

গ্রেপ্তার প্রতারণা চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জেইউ/এমএইচএস