পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের নারকীয়তা পৃথিবীর ইতিহাসের যেকোনো জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডকেও হার মানায়। নারী ও শিশুদের যুদ্ধের সময় নিরাপত্তা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ওই কালরাতে তাও মানা হয়নি। সেই রাতে অন্য সবার সঙ্গে হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিশুপুত্র শেখ রাসেলকেও।

হত্যাযজ্ঞে দাঁড়িয়ে আতঙ্কে শিশু রাসেলের করুণ মিনতি ছিল খুনিদের কাছে। মায়ের লাশ দেখে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে শেষ আশ্রয় পেতে চেয়েছিল মমতাময়ী বোনের কাছে। খুনিদের কান্না জড়ানো কণ্ঠে সে বলেছিল, ‘আমাকে হাসু আপার (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দিন’।

বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। বাড়ির ছোট্ট ছেলে হিসেবে সবার কাছে ছিল আদরের। উত্তাল রাজনৈতিক পরিবেশ ও সংকটের মধ্যেও সে চির সঙ্গী সাইকেল নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখত। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন দীর্ঘ নয়মাস পিতার অনুপস্থিতি তার ওপর প্রভাব ফেলে। পরে সব সময় পিতার কাছাকাছি থাকতে জেদ করত সে।

আগস্টের সেই রাতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাইকে হত্যা করে তাদের লাশ দেখিয়ে তারপর রাসেলকে হত্যা করা হয়। তাকে কাজের লোকজন পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নিয়ে যায়। কিন্তু ঘাতকরা তাকে দেখে ফেলে। বুলেটবিদ্ধ করার আগে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে অনুমতি নেওয়া হয়। রাসেল প্রথমে মায়ের কাছে যেতে চায়। মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিনতি করেছিল ‘আমাকে হাসু আপার (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দিন।’

ঘাতকরা তাও শোনেনি। গুলি করে তার মায়ের লাশের ওপর তাকেও শুইয়ে দিয়েছিল। এ যেন আরেক কারবালা। সেখানে সীমারের ভূমিকায় ছিল ঘাতকরা।

এইউএ/এসএম