রাজধানীর উত্তরায় বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার চাপায় পাঁচজনের নির্মম মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে সেভ দ্য রোড। সংস্থাটি বলছে, বিআরটি প্রকল্পের মতো যত প্রকল্প রয়েছে, সব প্রকল্প বন্ধ করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার ও বিচার করতে হবে।

সোমবার (১৫ আগস্ট ) রাতে এক বিবৃতিতে সেভ দ্য রোডের চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা এ দাবি জানান। 

বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, ১৫ আগস্ট গার্ডার পড়ে পাঁচজনের মৃত্যুই প্রথম নয়; এক মাস আগে গত ১৫ জুলাই ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় বিআরটি প্রকল্পের নিরাপত্তারক্ষী জিয়াউর রহমান (৩০) নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও দুজন।

তারা বলেন, ২০১২ সালে বিআরটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ওই সময় মোট ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকার এই প্রকল্পটি শেষের মেয়াদ বলা হয়েছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে; কিন্তু ২০১৭ সালে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়। 

২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে প্রাক্কলন ব্যয় বাড়িয়ে উন্নীত করা হয় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকায়; কিন্তু এ নির্ধারিত সময়েও বিআরটির কাজ শেষ করা যায়নি। কারণ ঠিকাদারদের গ্রহণযোগ্য কর্মপরিকল্পনা তৈরির মতো দক্ষ জনবল, সরঞ্জাম, অর্থ, প্রয়োজনীয় উপকরণ কিছুই নেই। এ কারণে তাদের কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবের মিল ছিল না।

তারা আরও বলেন, সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৯১৭ দিনে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কর্মপরিকল্পনা বদল করেছে ছয়বার। তাদের সপ্তম সংশোধিত পরিকল্পনায় ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট কাজ শেষ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সেভ দ্য রোড বলছে, গত ১০ বছর ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার এলাকায় জমেছে ইকুইপমেন্ট জঞ্জাল। এই জঞ্জাল অপরিকল্পিত-অব্যবস্থাপনার মধ্যে ১০ বছর সাধারণ মানুষকে যেমন কষ্ট দিয়েছে, তেমন কেড়ে নিয়েছে সময় এবং অর্থ। এ প্রকল্পের কারণে প্রতিদিন উত্তরা-গাজীপুর-ময়মনসিংহ রোডে জ্যাম থাকতো ১৩-১৪ ঘণ্টা। প্রতিদিন কেবলমাত্র জ্যামের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ২৬-৫০ কোটি টাকা। সেই ক্ষতির সঙ্গে নতুন করে বাংলাদেশ পাঁচটি প্রাণও হারাল। এ অবস্থায় বিআরটি প্রকল্পের মতো যত প্রকল্প রয়েছে, সব প্রকল্প বন্ধ করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার ও বিচার হোক।  

এএজে/আরএইচ