চকবাজারের যে ভবনটিতে আগুন লেগে সোমবার ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে সেই ভবনটি নির্মাণের অনুমোদন ছিল না। কামালবাগের ওই জায়গায় আগে একটি স’মিল ছিল। সেখানে টিন শেডের একটি ঘর ছিল, আর ছিল একটি হোটেল। আশপাশের জায়গা ছিল ফাঁকা। দুই বছর আগে এখানে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয় চারতলা ভবন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, মো. রানা নামে একজন ওই ভবনের মালিক। তিনি ভবনটির নিচতলার উত্তর পাশ ভাড়া দেন বরিশাল হোটেলের মালিককে। অপর পাশে নিজে দোকান নিয়ে বসেছেন। মাঝে একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে। ভবনটির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় প্লাস্টিকের খেলনার কারখানা ও গোডাউন রয়েছে। এই অংশের মালিক মো. নজরুল নামে এক ব্যক্তি।

ভবনের উত্তর পাশের একটি প্লাস্টিক কারাখানার কর্মকর্তা আহমেদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক থেকে দেড় বছর আগে এ ভবন তৈরি করা হয়। ভবন নির্মাণের আগে এখানে একটি স’মিল ছিল।

তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি জমির প্রকৃত মালিক থাকেন কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরায়। তিনি কাউকে ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেননি। আমরাও তার কাছ থেকে জায়গা লিজ নিয়ে এখানে ব্যবসা করছি। শুধু আমি নই, এই গলির সবাই জায়গা লিজ নিয়েই ব্যবসা করছেন।

একই গলির মুদি দোকানদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভবন তৈরি করতে রাজউকের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু রাজউক এখানে ভবন তৈরির অনুমোদন দেয়নি বলে জানি।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি অনুমোদন না নিয়ে ভবনটি তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

নাম গোপন রাখার শর্তে এই গলির এক বাসিন্দা বলেন, এখানে ভবন তৈরি করতে সরকারের অনুমোদন লাগে না। নেতাদের খুশি করতে পারলেই সব ব্যবস্থা হয়ে যায়।

জানা গেছে, আগুন লাগা চারতলা ভবনটির মালিক চকবাজারের আলম নামে এক ব্যক্তি। আলমের মৃত্যুর পর তার ছেলে মো. রানা সবকিছু দেখাশোনা করেন। ভবনটির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় পলিথিন ও প্লাস্টিকের খেলনার কারখানা দিয়েছেন মো. নজরুল নামে এক ব্যক্তি। দুর্ঘটনার পর তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজ নেই ভবনের বর্তমান মালিক রানারও।

অগ্নিকাণ্ডে ৬ জন নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেবল বরিশাল হোটেলের মালিক ফখরুদ্দিনকেই গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ।

আগুনে মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের একজন মো. রুবেলের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী চকবাজার থানায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন।

এমআই/ওএফ