সড়কে মৃত্যুর মিছিল কমাতে সড়ক পরিবহন বিধিমালা দ্রুত প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চের কান্ট্রি (বাংলাদেশ) ডিরেক্টর পরিচালক ড. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী।

বুধবার (১৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন বিধিমালা দ্রুত প্রণয়নের দাবিতে আলোচনা সভায় এ দাবি জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চের বাংলাদেশ পরিচালক ড. সেলিম মাহমুদ চৌধুরীসহ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের রোড সেফটি প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

সভার আলোচক ড. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে বর্তমান যে আইনটি আছে তার অনেক দুর্বল দিক রয়েছে, যার ফলে এর সঠিক বাস্তবায়ন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। আবার যা বাস্তবায়ন করা সম্ভব তাও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এ সংক্রান্ত বিধিমালা এখনও পর্যন্ত প্রণয়ন হয়নি। বর্তমান সড়ক দুর্ঘটনার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আইনের দুর্বল দিকগুলো নিরসন করা দরকার। আর এই মুহূর্তে বর্তমান আইনের বিধিমালা দ্রুত প্রণয়ন একান্ত জরুরি। 

আরও পড়ুন : বিয়ের দাওয়াত খেয়ে বা‌ড়ি ফেরা হলো না তাদের

সভার সভাপতি ইকবাল মাসুদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে আমাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। আইনের দুর্বল দিক, আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়া, উপযুক্ত আইন প্রণয়নে ও বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের বাধা, সরকারের সদিচ্ছা ও আমাদের সচেতনতার অভাবের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, দেশের যে কোনো উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা অন্যতম ও অনস্বীকার্য। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণয়নে গণমাধ্যম যেভাবে এগিয়ে এসেছিল ঠিক একইভাবে গণমাধ্যম এগিয়ে এলে বিধিমালা দ্রুত প্রণয়ন হবে।

সভার মূল বক্তা ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের রোড সেফটি প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান তার প্রবন্ধে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫টি রিস্ক ফ্যাক্টর, সড়ক দুর্ঘটনার আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রেক্ষাপট, আইনের দুর্বল দিক ও বিধিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

এ সময় তিনি গত কয়েক মাসের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। গত জুলাই মাসেই দেশে ৬৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৩৯ জন নিহত এবং ২ হাজার ৪২ জন আহত হয়। অন্যদিকে এপ্রিল মাসে ৪২৭টি দুর্ঘটনায় ৮১ জন শিশুর মৃত্যু হয়, যা আমাদের ভাবায়। তবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার হার ও মৃত্যু অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। যার মধ্যে অন্যতম হলো বিধিমালার দ্রুত প্রণয়ন।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, দেশে উন্নয়ন হচ্ছে, হচ্ছে সড়কেরও উন্নয়ন। কিন্তু থামছে না সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। পত্রিকার পাতা খুললে কিংবা টিভি চ্যানেলের সংবাদের দিকে তাকালে প্রায় প্রতিদিনই চোখে পড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত হওয়ার খবর। সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে সরকার সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সালে প্রণয়ন করে। আইনের সঠিক বাস্তবায়নে সড়ক পরিবহন বিধিমালা দ্রুত প্রণয়ন আবশ্যক। 

আরও পড়ুন : বগুড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক নিহত

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র রিপোর্টার জামিউল আহসান শিপু, দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার সিরাজুল ইসলাম, কালের কন্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক রেজওয়ান বিশ্বাস, দ্য বাংলাদেশ টুডের নিউজ এডিটর সাইফুল ইসলাম, যায়যায়দিনের নিজস্ব প্রতিবেদক গফফার খান চৌধুরী, দেশ রূপান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক ইমন রহমান, মানবজমিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার শুভ্র দেব, জনকন্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক ফজলুর রহমান, ভোরের কাগজের নিজস্ব প্রতিবেদক ইমরান রহমান, আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মারুফ কিবরিয়া, প্রতিদিনের সংবাদের নিজস্ব প্রতিবেদক আরমান ভুইয়ান, বাংলা নিউজের স্টাফ রিপোর্টার প্রশান্ত মিত্র, ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক মনি আচার্য্য, জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক তৌহিদুজ্জামান তন্ময়, ডেইলি অবজারভারের বিজনেস রিপোর্টার শেখ আতিকুর রহমান, মুসলিম টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার শিকদার মুরাদ, বার্তা প্রবাহের ইব্রাহিম রহমান রবিন, বাংলা টাইমসের স্টাফ রিপোর্টার হাফিজুর রহমান, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের রোড সেইফটি প্রকল্পের অ্যাডভোকেসি অফিসার (পলিসি) ডা. তাসনিম মেহবুবা বাঁধন ও অ্যাডভোকেসি অফিসার (কমিউনিকেশন) তরিকুল ইসলাম।

এমএসি/এনএফ