কূটনৈতিক পাসপোর্টের পাশাপাশি বাংলাদেশের ৮১টি মিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের পরিবারের নির্ভরশীল সদস্য এবং প্রাধিকারভুক্ত গৃহকর্মীদের পাসপোর্ট ইস্যু করতে চায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (১৪ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বরাবর এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।

পররাষ্ট্রসচিবের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশে বাংলাদেশের ৮১টি মিশনে বর্তমানে প্রায় ৬০০ জন ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মকর্তা/কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন, যাদের পরিবারের নির্ভরশীল সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৮০০। ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে মিশনে গেলেও, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মকর্তা/কর্মচারীরা, তাদের পরিবারের নির্ভরশীল সদস্য, প্রাধিকারভুক্ত সকল কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের গৃহকর্মী অফিসিয়াল পাসপোর্ট নিয়ে মিশনে গমন করেন। এছাড়া অনেক সময় মিশনে পদায়িত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিজ খরচে সঙ্গী হিসেবে তাদের পিতা-মাতা সাধারণ পাসপোর্ট নিয়ে মিশনে গমন করেন।

চিঠিতে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগের অধিভুক্ত এমআরপি শাখা থেকে মন্ত্রণালয় ও মিশনে কর্মরত ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা কূটনৈতিক পাসপোর্ট পান। অন্যরা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অধীন সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে অফিসিয়াল ও সাধারণ পাসপোর্ট পান। আপনি একমত হবেন, দাপ্তরিক কাজের ব্যস্ততা, বদলিজনিত প্রস্তুতি ও নানাবিধ কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পাসপোর্ট তৈরির আবেদনের কাজটি দূরত্ব, সময় ও প্রক্রিয়াগত বিষয় বিবেচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা অধিকতর সুবিধাজনক হবে। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতরাও তাদের বার্ধক্যজনিত অসুবিধার দরুন বিভিন্ন সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছেন মন্ত্রণালয় থেকে তাদের পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়াকরণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য।

পররাষ্ট্রসচিব চিঠিতে লিখেছেন, এ অবস্থায় তাদের সুবিধার্থে কূটনৈতিক পাসপোর্টের পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগের অধীনে সীমিত পরিসরে সরকারি ও সাধারণ পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। এতে তারা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি আগারগাঁওয়ের পাসপোর্ট অফিসসহ অন্যান্য পাসপোর্ট অফিসসমূহের ওপর চাপ কমাতেও সাহায্য করবে। তাছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা চলমান থাকায়, সরকারি ও সাধারণ পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা করা কষ্টসাধ্য কোনো বিষয় হবে না, কিন্তু এ ব্যাপারে ইতিবাচক বিবেচনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্ট প্রাপ্তি সহজলভ্য করতে সহায়ক হবে। জানা মতে, সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত সামরিক ব্যক্তির পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যদের সরকারি ও সাধারণ পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণের সুবিধার্থে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে এবং ঢাকা সেনানিবাসে স্বতন্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে।

বর্ণিত প্রেক্ষাপটে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কূটনৈতিক পাসপোর্টের পাশাপাশি সীমিত পরিসরে সরকারি ও সাধারণ পাসপোর্ট ইস্যু করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আপনি অনুধাবন করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার ইতিবাচক নির্দেশনা ও একান্ত সহযোগিতা কামনা করছি।

এনআই/এসকেডি