ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসে খুনি কর্নেল রশিদ যখন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করে বঙ্গবন্ধুকে খুনের পরিকল্পনার কথা জানায়, তখন তিনি তাকে ‘গো এহেড’ বলেছিলেন। এ ‘গো এহেডে’র মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, সরকারের বিরুদ্ধে ক্যু এবং রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করার নির্দেশ ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৮ অগাস্ট) সন্ধ্যায় জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ কর্তৃক জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

নেপথ্য থেকে শুধু হত্যাকাণ্ড ঘটানোয় নয়, খুনিদের রক্ষায়ও জিয়াউর রহমানের মূল ভূমিকা ছিল উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, জিয়া রহমানের মূল কার্যক্রমই ছিল নেপথ্য থেকে এই হত্যাকাণ্ড সামাল দেওয়া। সেই খুনিদের বাঁচানো। কেউ যেন সেই খুনিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিতে পারে এবং তাদের যে মূল উদ্দেশ্য, তা যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় সেটা নিশ্চিত করা। সেটাই তিনি সুচারুভাবে সম্পন্ন করেছেন।

আরও পড়ুন : নারী নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার নির্দেশনার বাস্তবায়ন নেই 

মেয়র তাপস বলেন, বাবা শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে সাক্ষাতের ছলে ১৯৭৫ সালের ১৩ অগাস্ট খুনি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের রেকি করতে এসেছিলেন। সেদিন দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে তিনি বাবার সঙ্গে দেখা করে গেছেন। সেদিন জিয়াউর রহমানের আমাদের বাসায় আসার মূল উদ্দেশ্য ছিল, এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য আছে কিনা, তা জানার অনুমান করা। আমরা কোনো কিছু জানি নাকি? বাসার পরিস্থিতি কী, আশেপাশের অবস্থা কী? এসব রেকি করার জন্যই সেদিন খুনি জিয়া নিজেই আমাদের বাসায় এসেছিল।

১৫ অগাস্ট হত্যাকাণ্ড পরবর্তী কর্মকাণ্ড ও তৎপরতা জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকাকে প্রমাণ করে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ১৫ হত্যাকাণ্ডের পরে যারা এই হত্যাকাণ্ডকে বাধা দিতে চেয়েছিল, প্রতিঘাত করতে চেয়েছিল, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিল, কর্নেল নুরুদ্দীন ও শাফায়াত জামিলকে আটক করে কর্নেল রশিদ সেদিন জিয়াউর রহমানের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। খুনের পরবর্তী ঘটনা আরও প্রমাণ করে যে, জিয়াউর রহমান তাদের আস্থার জায়গায় ছিলেন। সাধারণ মানুষের কিংবা যে কোনও ধরনের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং প্রতিহত করার যে কোনো প্রচেষ্টা সেদিন জিয়াউর রহমান সামাল দিয়েছিল। সুতরাং এসব তথ্য-উপাত্ত প্রমাণ করে যে ১৫ অগাস্ট হত্যাকাণ্ডে খুনি জিয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল।

অনুষ্ঠান শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ অগাস্ট কাল রাতে শাহাদাতবরণকারী সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।              

গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদ উল্লাহ মিনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহম্মেদ মন্নাফী, সহ-সভাপতি হাজী মো. শাহিদ, সাজেদা বেগম, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মিরাজ হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম, কার্য নির্বাহী সদস্য ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুরস প্রমুখ।

এএসএস/এসকেডি