চট্টগ্রামের একটি অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের আগমনের প্রতিবাদে কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ সনাতনী সমাজ। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস-নির্যাতনের সংবাদকে মিথ্যা প্রচারণা উল্লেখ করে দেশে-বিদেশে বক্তব্য দেওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে নগরীর চেরাগী পাহাড় এলাকায় এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে কালো পতাকা মিছিল বের হয়।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ আয়োজিত জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.কে আব্দুল মোমেন।

সমাবেশে রানা দাশগুপ্ত বলেন, দেশের একের পর এক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এদেশ থেকে বিতাড়িত করার নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। গত শারদীয় দুর্গোৎসবে সারাদেশে পূজামণ্ডপে, মন্দিরে, সনাতনী সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে। এসব ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। অথচ আমাদের দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন সময় দেশের বাইরে বক্তব্য দিয়েছেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস-নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। 

সমাবেশে রানা দাশগুপ্ত বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বারবার দেশের বাইরে প্রচার করেছেন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন নিয়ে সাংবাদিকরা মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করেন। তিনি বারবার বলেছেন, বাংলাদেশে কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয় নেই। এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সাম্প্রদায়িক নির্যাতন নিয়ে মিথ্যাচার করে। 

তিনি আরও বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৩৫ হাজার দুর্গাপূজা হয়েছে। এই দুর্গাপূজা নাকি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। অথচ এগুলো সব নির্জলা অসত্য এবং মিথ্যা কথা। যেহেতু এসব বক্তব্যের জন্য তিনি এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। 

রানা দাশগুপ্ত বলেন, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের অনুষ্ঠানের সঙ্গে আমরাও অংশীদার। আমরা চাই এ আয়োজন সর্বাত্মকভাবে সফল ও সার্থক হোক। গতকাল (বুধবার) রাতে হঠাৎ করে জানতে পারলাম, জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে তিনি উপস্থিত থাকবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই চট্টগ্রাম আগমনকে আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। এই আগমনের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ তা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তার বক্তব্যের জন্য প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থের প্রশ্নে যে দীর্ঘদিনের লড়াই সংগ্রামেরই অংশ বলে আমরা মনে করি। 

কেএম/এসকেডি