চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক। তাদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা ও জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে ‘সচেতন নাগরিকবৃন্দ, চট্টগ্রাম’ ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে।

সোমবার ( ২২ আগস্ট) নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বছরের পর বছর ধরে চা শ্রমিকরা নির্যাতন-নিপীড়ন ও শোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। বাগান মালিকরা শ্রমিকদের রক্তের ওপর হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন। অথচ চা শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ১২০টাকা। চা শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের ঘামের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে।

এসময় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নাট্যকার প্রদীপ দেওয়ানজী, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, ন্যাপ কেন্দ্রীয় নেতা মিটুল দাশগুপ্ত, বিএফইউজ’র যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, জাসদ নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, শ্রমিক নেতা ফজলুল কবির মিন্টু, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, চা শ্রমিকদের বেতন মাত্র ১২০ টাকা। অথচ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার লোক এ দেশে আছে। এর স্থায়ী সমাধান করতে হলে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে চা শ্রমিকদের অনেক ত্যাগ। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় কেন্দ্র ছিল চা শ্রমিকদের বাড়ি। তাদের জীবনমান আজো মানবেতর। আশা রাখি প্রধানমন্ত্রী এর সমাধান দেবেন। সমাধান না হলে আমরা আবারও পথে নামব।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের রক্তের ওপর হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন মালিকরা। অথচ ৩০০ টাকা মজুরি দিতে পারছেন না। এ অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। রক্ত চুষে যারা সম্পদ গড়েছেন তারা দাবি মেনে নিন। সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়কে বলব, অবিলম্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মতো সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করা হোক। তা যেন কমপক্ষে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সমান হয়। চা শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের শ্রমের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। চা শ্রমিকদের বছরের পর বছর যে শোষণ করা হয়েছে, এর জবাব একদিন দিতে হবে।

প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, নিরীহ বঞ্চিত চা শ্রমিকরা জীবনের প্রয়োজনে পথে নেমেছেন। তাদের যে ঘর দেওয়া হয় তা বাসযোগ্য নয়। স্কুল থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ অনেক চা বাগানে স্কুল নেই। প্যারাসিটামল ছাড়া ওষুধ নেই। পরিবার নিয়ে ১২০ টাকায় কী করে চলেন? শ্রমিকরা কেউ মানেনি ১৪৫ টাকা। তারা হয়ত পেটের জ্বালায় বাগানে ফিরেছেন। কত কেজি পাতা তুললে ১২০ টাকা বেতন দেয়। এটা কেউ বলছেন না।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, সংবেদনশীল হোন। শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাগান মালিকদের বাধ্য করুন। কোনো বাগান মালিক তো আজো ব্যবসা ছেড়ে চলে যায়নি। এ বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না।

কেএম/এমএইচএস