রাজধানীর চকবাজারের বরিশাল হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে ৬ জন নিহতের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন হোটেল শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট)  সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করেছে শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন। মিছিল শেষে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বরাবর ৮ দফা দাবিসহ স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। 

সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, গত ১৫ আগস্ট রাজধানীর চকবাজারে অগ্নিদগ্ধ হয়ে বরিশাল হোটেলের ৬ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে শ্রমিকদের মারা যাওয়ার কারণ স্পষ্ট। সারারাত ডিউটি শেষে হোটেলের এক কোণে তাদের অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ জায়গায় ঘুমাতে দেওয়া হয়। ঘুমন্ত অবস্থায়ই দগ্ধ হয়ে তারা মারা যান।

তিনি বলেন,  শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তাসহ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চয়তার দাবিতে হোটেল শ্রমিক ফেডারেশন দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। তবে কোনো কর্তৃপক্ষই তাতে সাড়া দেয়নি। তাই আজকের এই পরিণতি। এটি একটি অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মালিকসহ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও অনুমোদনের সঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, দেশের হোটেল শিল্প এই খাতে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মরত এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল রয়েছে তাদের পরিবার। অথচ এ খাতের মালিকদের শুধু মুনাফা কেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা। ফলে শ্রমিকদের জীবন আজ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। 

সংগঠনটি শ্রমিকদের স্বার্থ সংবলিত ৮ দফা দাবি পেশ করে। তাদের দাবিগুলো হলো 

১. প্রতিষ্ঠান আইন যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে এবং অনিয়ম দূর করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

২. চকবাজারের বরিশাল হোটেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত প্রত্যেক শ্রমিক পরিববারকে আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। 

৩. শ্রমিক ও তার পরিবারের নিশ্চয়তার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল গঠন করতে হবে।

৪. শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন ব্যবস্থাসহ তাদের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। 

৫. বিধি অনুযায়ী নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রম আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। 

৬. দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সব হোটেল শ্রমিকদের জন্য স্বল্পমূল্যে পর্যাপ্ত রেশনিং ব্যবস্থা চালু ও ৭০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে। 

৭. অবিলম্বে হোটেল সেক্টরে মজুরি বোর্ড গঠন করে বাজার দরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাধারণভাবে বাঁচার মতো নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে।

৮. কর্মী ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ ও শ্রম আইন স্বীকৃত সব অধিকার ও সুবিধা শ্রমিকদের প্রদান করতে হবে।

এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিকরা।

আইবি/এমএ