শব্দ দূষণ রোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ সময় জোরে হর্ন বাজানোর দায়ে ১৬টি গাড়িকে ৪ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে এতে অসন্তোষ দেখা গেছে দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে।

সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ের রাস্তায় রেল ভবনের সামনে এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। 

সরেজমিন দেখা যায়, গুলিস্তান টু হাইকোর্ট-মুখি রাস্তায় অভিযান পরিচালনা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ সময় একটি গাড়ি ধরলেও পাশে হর্ন দিয়ে অন্য গাড়িগুলোকে চলে যেতে দেখা গেছে। আবার অন্য পাশের রাস্তায় হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার দেখা গেছে।

জোরে হর্ন বাজানোর দায়ে বাইকচালক স্থপতি মনসুর আহমেদকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি হর্ন বাজাননি বলে দাবি করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে। তারপরও তাকে জরিমানা করা হয়। এজন্য তিনি কারণ জানতে চান। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এতে হস্তক্ষেপ করেন।  

মনসুর আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শব্দ দূষণের জন্য যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হচ্ছে, আমি এটাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু নীরব এলাকায় হর্ন না দেওয়ার পরও আমাকে পুলিশ সদস্যরা ডেকে এনে জরিমানা করল। শব্দ দূষণের মাত্রা কত, এটা আমাদের জানানো হয় না। আবার হর্নগুলো আমরা আলাদা করে লাগাইনি, বাইকের সাথেই ছিল। আমরা তো কিছু বলতেও পারি না। ম্যাজিস্ট্রেট তার ক্ষমতা বলে অনেক কিছুই করতে পারে। এটা জনগণের জন্য একটা বিপত্তি।  

অ্যাপে রাইড শেয়ার করেন এজহারুল ইসলাম। তারও অভিযোগ, হর্ন না দিয়ে জরিমানা গুনতে হয়েছে।
 
এজহারুল ইসলাম বলেন, আমি হর্ন দিইনি। আমাকে দাঁড়ানোর সিগন্যাল দিয়েছে, আমি দাঁড়িয়ে গেছি। এরপরও ২০০ টাকা জরিমানা করেছে। যে অন্যায় করবে, তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু গণহারে ধরে শাস্তি দেবে কেন? কেউ অন্যায় করে পার পেয়ে গেলে আর আমি অন্যায় না করেও শাস্তি পেলাম। 

তিনি বলেন, আমার বাইক চেক করে হর্নের মাত্রা ৯৯ (৯৯ ডেসিমেল) পেয়েছে। কিন্তু এখানে কথা হলো, এটা তো আমরা পরিবর্তন করিনি। কোম্পানি যেভাবে বাইক ইমপোর্ট করেছে, সেভাবেই আছে। তারা বলেছে, এটা কমাতে হবে। কীভাবে কমাব জানতে চাইলে তারা সেটা বলতে পারেনি। তারা নিজেরাও জানে না সেটা।

সিএনজিচালক মো. হাবীবকে জরিমানা করা হয়েছে ২০০ টাকা। এতে তিনিও খুশি নন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমি হর্ন দিইনি, তারপরও জরিমানা করা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য ভোগান্তি।

এক পাশের রাস্তায় অভিযান চালালেও অন্য পাশের রাস্তায় হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরীন হক বলেন, আমার একার পক্ষে দুই দিকে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব নয়। আজকে এদিকে করছি, কাল হয়ত অন্যদিকে করব। আমাদেরও তো কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।

একসঙ্গে অনেক গাড়ি যাচ্ছে, সেখানে কোন গাড়ি হর্ন বাজাচ্ছে, কোনটি বাজাচ্ছে না, সেটা চিহ্নিত করবেন কীভাবে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

গাড়ির মালিকরা ডেসিমেল পরিবর্তন কীভাবে করতে পারেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে বিআরটিএ‌র সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বলেছি, গাড়ি কেনার সময়ই যেন চেক করে নেওয়া হয়।

এএজে/এসকেডি