বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দেশের সুশীল সমাজ কোনো কথা বলে না কেন সে প্রশ্ন তুলেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের অবস্থান তুলে ধরার জন্য মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন তোলেন প্রতিমন্ত্রী। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে দেখছি সিভিল সোসাইটি কথা বলছেন না। কেন তারা বলছেন না? তাদের উদ্দেশ্য একদম পরিষ্কার। তাদের উদ্দেশ্য আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মকে সহায়তা করা। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সুশীল সমাজকে কিন্তু আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছিল।

ব্যাচেলেটের সফর ঘিরে বিএনপি সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, তার সফরের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর একটি ওয়েবসাইটে তারা খুব একটিভ হয়ে গেল। নয়াপল্টনে বিএনপি অফিস খুব একটিভ হয়ে গেল। প্রতিদিন তারা মিটিং করেছে, বৈঠক করেছে, প্রেস রিলিজ করেছে, বাইরে লিখেছে, যেন তার কানে পৌঁছায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল তার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, এ ধরনের কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি আসেননি। বাংলাদেশের সো কলড বিরোধীদলগুলোর ধারণা ছিল এ মানুষটিকে বললে তাদের অনেক দাবি আদায় হয়ে যাবে। তারা বোকার স্বর্গে বাস করেন এবং তারা বিশ্ব কীভাবে পরিচালিত হয় এবং জাতিসংঘ কীভাবে পরিচালিত হয় তার বিন্দুমাত্র ধারণা তাদের মধ্যে নেই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা তার কাছে এই দাবিগুলো উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল। তিনি কিন্তু তাদের কারও সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি দায়িত্ব দিয়েছিলেন তার দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়া বিষয়ক পরিচালককে। তারা সেই পরিচালকের সঙ্গে দেখা করেছেন। তার কাছে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কাছে সুশীল সমাজের কিছু লোকজন বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করেছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা তার সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখান থেকে এ রকম দাবিও করা হয়েছে, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করার জন্য, তারা এ কাজগুলো করবে কিনা। সে পরিষ্কারভাবে বলেছে, তার মেন্ডেটে নির্বাচন নিয়ে, সরকার ব্যবস্থা নিয়ে; নির্বাচন কীভাবে হবে এটা জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে আমরা কাজ করছি। এটার কিছু কিছু জায়গায় মিস ইউজ হয়েছে। কিন্তু আমরা এটা নিয়ে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করছি। ডিজিটাল স্পেসে কাউকে হ্যারাজ বা মিস ইনফরমেশন দেওয়া বন্ধ করার একটা প্রক্রিয়া লাগে। এটা কোনোভাবেই সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার জন্য না।

মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে অনেক মানুষের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন শাহরিয়ার আলম।

এনআই/এসকেডি