আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক

বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার বন্ধের উপায় খুঁজছে সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। 

কারাবন্দি থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ। এর পর থেকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি ওঠে।

ওই দাবির প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখনও আমাকে কিছু বলেননি। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি। এ আইনের যে অপব্যবহার ও দুর্ব্যবহার হচ্ছে, সেটা বন্ধে আরও কিছু করা যায় কি-না সে ব্যাপারে ইউনাইটেড ন্যাশনস, হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের সঙ্গে আমি একবার বৈঠক করেছি। আমাদের আইনটি আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে মিলে কি-না সেটা দেখার জন্য আমি আবারও বসবো।

তিনি বলেন, আমরা এটা বিবেচনা তো করবোই। কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট দেশের জন্য খুবই প্রয়োজন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পুনর্বিবেচনা নয়। এটার যে অপব্যবহার, মিস ইউজ অ্যান্ড অ্যাবিউজ হচ্ছে, সেটা রোধ করার জন্য বিদ্যমান আইনে কোনো সুযোগ আছে কি-না সেটা দেখছি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় বিচারের মুখে থাকা মুশতাক আহমেদ ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে কারাবন্দি অবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কারাগারে মারা যান। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ছোট বালাপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মুশতাক বাংলাদেশে কুমির চাষের অন্যতম উদ্যোক্তা।

করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে গত বছরের ৬ মে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও মুশতাককে র‌্যাব আটক করে। পরদিন ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়। মুশতাককে গ্রেপ্তারের পর পাঠানো হয়েছিল ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে; সেখানে থেকে গত বছরের ২৪ অগাস্ট তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে গণসংহতি আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। বিক্ষোভ শেষে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাতিল ঘোষণা করে এর প্রতি ‘বৃদ্ধাঙ্গুলি’ প্রদর্শন করেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। একই দাবিতে শুক্রবারও শাহবাগে বিক্ষোভ করে ছাত্র ফেডারেশন। এসময় পুলিশ  বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ তাদের।

এইউএ/এমএইচএস