বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী নিতে ব্রুনাইকে প্রস্তাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি দেশটিতে বাংলাদেশি মানবসম্পদ নিয়োগের প্রস্তাবিত সমঝোতা স্মারক শিগগিরই স্বাক্ষর করার আশাবাদ ব্যক্ত করে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

বুধবার (৩১ আগস্ট) বন্দর সেরি বেগাওয়ানে বাংলাদেশ-ব্রুনাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব এ প্রস্তাব দেন।

প্রায় তিন বছর অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ব্রুনাইয়ের পক্ষে দেশটির স্থায়ী সচিব পেঙ্গিরান নরহাশিমাহ বিন্তি পেঙ্গিরান মোহাম্মদ হাসান। এ সময় বাংলাদেশ হাইকমিশনার নাহিদা রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে উভয় পক্ষই বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের মূল্যবান অবদানের কথা স্বীকার করেছে। ব্রুনাই পক্ষ তাদের আসন্ন মেগা প্রকল্পগুলোতে আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে।

বৈঠকে বাংলাদেশ-ব্রুনাইয়ের মধ্যে অভিবাসন, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, জলাশয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, স্বাস্থ্য, সংযোগ, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, যুব খাতে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। উভয়পক্ষ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, আইসিটি, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটন, অবকাঠামো উন্নয়ন, ওষুধ ও পাটজাত পণ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা খুঁজতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ হালাল বাণিজ্য খাতের উন্নয়ন ও প্রচারের জন্য ব্রুনাইয়ের সমর্থন চেয়েছে।

এছাড়া উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য বিমান ও শিপিং সংযোগ সহজতর করার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।

উভয়পক্ষ দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততার স্তরে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং আগামী দিনে পারস্পরিক সুবিধার জন্য দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও সম্প্রসারিত করার অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ফলপ্রসূ এবং উল্লেখযোগ্য আলোচনার প্রশংসা করে উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতি ধরে রাখতে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক যোগদান প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

পররাষ্ট্রসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশে ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি স্নাতকোত্তর সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিপথ ধরে রাখতে ব্রুনাইয়ের সমর্থন চান। ব্রুনাইয়ের স্থায়ী সচিব বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সফল যোগ্যতার জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান।

বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব রোহিঙ্গা সংকটের কথা তুলে ধরেন। তিনি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের তাদের মাতৃভূমিতে দ্রুত প্রত্যাবাসনে ব্রুনাইয়ের সমর্থন চেয়েছেন। ব্রুনাই এ ইস্যুতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারশিপে বাংলাদেশের প্রার্থিতার পক্ষে তাদের সমর্থনেরও আশ্বাস দিয়েছে ব্রুনাই।

২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ ও ব্রুনাইয়ের মধ্যে প্রথম এফওসি অনুষ্ঠিত হয়।

এনআই/জেডএস