রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে ১২০ টন ওজনের গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারে পড়ার ঘটনার ১২টি কারণ চিহ্নিত করেছে গঠিত তদন্ত কমিটি।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী এ তথ্য জানান।

আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, দুর্ঘটনার পেছনে ১২টি কারণ চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি। কারণগুলো হলো- পূর্বানুমতি ছাড়া ঠিকাদার কোম্পানি সরকারি ছুটির দিনে কাজ করেছে, বন্ধের দিন কাউকে না জানিয়ে কাজ করেছে, প্রথমবার দিনের বেলায় গার্ডার স্থাপনের কাজ করেছে, অন্যদিন তারা রাতে কাজটি করত। ক্রেনটি সহকারীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে, ড্রাইভার থাকলে সেটি হতো না। ক্রেনটির লাইসেন্স ছিল না। ক্রেনটি যেখানে চালানো হচ্ছিলে সেই জায়গাটি অসমতল ছিল। ক্রেনটির ডিজিটাল মনিটর ছিল না। কাজের পূর্বানুমতি ছিল না। ট্রাফিক ব্যবস্থা ছিল না, মূলত ট্রাফিককে জানাতে হয়। 

তিনি বলেন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে যোগ্য লোক ছিল না, নিজেরা এসব লোক রেখেছিল। সেফটি ইঞ্জিনিয়ারের যথাযথ যোগ্যতা ছিল না। ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ছিল না। সেজন্য গার্ডার সরাতেও সময় লেগেছে। ঠিকাদার হিসেবে যাদের কাজ দেওয়া হয়েছিল তাদের কোনো অনুমোদন ছিল না।

সচিব বলেন, ঘটনার পর প্রথমে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়, পরে সেটি বাড়িয়ে পাঁচ সদস্য করা হয়। গঠিত কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দেয়। এরপর বুয়েটের এক্সপার্টকেও কমিটিতে যুক্ত করা হয়। তদন্ত করতে গিয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গ্রেপ্তারসহ সবার বক্তব্য তারা নিয়েছে। তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। ভিডিও ফুটেজে তার বিবরণ আছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বলছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি চিঠি দিয়েছে। কিন্তু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেটি মন্ত্রণালয়ে জানায়নি। তারা সেটি জানালে আমরা চাইনিজ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতাম। 

গত ১৫ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচ জন নিহত হন। আহত হন দুই জন। 

দুর্ঘটনায় নিহত আইয়ুব হোসেন রুবেলের প্রথম স্ত্রী শাহিদা খানম বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে একটি মামলা করেন। এরপর গত ১৭ আগস্ট রাতে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাট থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এসএইচআর/জেডএস