চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ চট্টগ্রাম রিজিয়নের পরিদর্শক মো. শাহজাহানের স্ত্রী ফেরদৌসী আকতারের দেড় কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে।

অন্যত্র বিক্রি হস্তান্তর স্থানান্তর বা বেহাত হওয়ার আশঙ্কায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত থেকে ওই আদেশ দেওয়া হয়েছে। দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থাবর ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে— ফেরদৌসী আকতার ও স্বামী শাহজাহানের নামে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় ১৪নং হাইলেভেল রোডের বহুতল ভবন। দালিলিকভাবে অর্ধেক সম্পত্তির মূল্য ধরা হয়েছে ৪৩ লাখ ১০ হাজার ৮৬৭ টাকা। পুরো জমি ও ভবনের মূল্য ধরা হয়েছে ৮৬ লাখ ২১ হাজার ৭৩৪ টাকা। কক্সবাজার সদর থানায় ৪ কাঠা জমি। যার রেজিস্ট্রেশনসহ জমি মূল্য ৬০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৩৪ টাকা।

আরও পড়ুন: স্ত্রীসহ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

অন্যদিকে অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ হওয়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে দুটি যাত্রীবাহী বাস, যা সৌদিয়া পরিবহনের নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম কক্সবাজার রোডে চলাচল করে। যার দালিলিক মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ওয়াসা রোড শাখার হিসাবে ৩ লাখ ৮৩৭ টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭২ টাকার সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ জুলাই চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার সাবেক ওসি ও বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ চট্টগ্রাম রিজিয়নের পরিদর্শক মো. শাহজাহান ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী আকতারকে আসামি করে মামলা করে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম।

মামলায় এক লাখ ৭১ হাজার ৭৩৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদান ও এক কোটি ৪৮ লাখ ৪ হাজার ৪১৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে লোহাগাড়া থানার ওসি মো. শাহজানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ শাহজাহান ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী আকতারের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এরপর ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল ফেরদৌস আকতার দুর্নীতি দমন কমিশনে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। ওই সম্পদ তার স্বামী শাহজাহানের সহযোগিতায় অর্জন করেছেন বলে দুদকের তদন্তের প্রমাণিত হয়েছে।

আরএম/এসএসএইচ