রাজধানীর কমলাপুর এলাকায় স্ত্রীকে রিকশায় উঠিয়ে কথা বলছিলেন স্বামী মিতুল রায় রনি। রিকশা ঘোরাতেই পেছন থেকে হ্যাঁচকা টানে রনির স্ত্রীর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেয় এক ছিনতাইকারী। ঘটনা বুঝেই ছিনতাইকারীর পিছু নেন মিতুল। কয়েকজন র‌্যাব সদস্যের সামনে পড়লে তারা ওই ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন।  

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে রনি ও তার স্ত্রীকে স্বর্ণের চেন বুঝিয়ে দেন র‌্যাব-৩ এর সদস্যরা।

আটক ছিনতাইকারীর নাম আরিফ হোসেন (২৯)। তিনি চাঁদপুর মতলব উত্তরের ফতুয়াকান্দির মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। 

আরও পড়ুন : ৫ মিনিটে ‘স্ত্রীকে হ্যাক’!

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে র‌্যাব-৩ স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারি পুলিশ সুপার ফারজানা হক বলেন, শুধু কমলাপুরেই নয় রাজধানীর খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহর মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়।

তিনি বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে রাজধানীর কমলাপুর, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, মুগদা, পল্টন, হাতিরঝিল এবং তেজগাঁও এলাকায় পৃথক অভিযানে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের আরও ২৮ সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার এবং ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

তারা হলেন- মো. ইসলাম (২২), মো. বাবু (২৭), মো. টিটু (২০), মো. শরিফ (২১), মো. নুরে আলম (২২), মুরাদীল মুস্তাকিম ওরফে মুরাদ (১৯), মো. জালাল (১৯), হৃদয়  (১৮), হোসেন ওরফে মোটু (১৯), মো. জয় (১৯), মো. সুমন (২১), ইয়াছিন রাব্বি (২০), টিটু (৪০), মো. পরান (২৬), রাসেল (২২), জীবন সরদার(২১), শুক্কুর (২০), সাগর হোসেন (২২), মাসুম খান (১৯), মিহির তালুকদার (২১), মো. হোসেন (২২), মো. ফারুক (২৮),  মেহেদী হাসান রানা (২৪), মো. সুজন (২২), মো. জুলহাস (৩০), কবির হোসেন (২২), মো. দেওয়ান আলী (২৫), এবং তৌহিদ হাওলাদার (২২)।

আরও পড়ুন : ৪০ কেজি দুধের ৩০ কেজিই ভেজাল

এসময় তাদের কাছ থেকে ১৮ টি মোবাইলফোন, ৭ টি সুইচ গিয়ার, ২ টি এন্টি কাটার, ৬ টি ব্লেড, ১ টি কাঁচি, চাকু, ক্ষুর, বিষাক্ত মলমের কৌটা, স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারী সদস্যরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। তারপর যাত্রীদের টার্গেট করে কখনও তাদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে, কখনও বিষাক্ত চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এভাবে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তারা ভিড়ের মধ্যে মিশে যায়। এছাড়াও কখনও ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মুখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুঁড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে যাত্রীদের যন্ত্রণায় কাতর করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এই ছিনতাইকারীদের ভুক্তভোগীরা খুব কম ক্ষেত্রেই সনাক্ত করতে পারেন। ফলে ছিনতাইকারীরা 
নির্বিঘ্নে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। 

জেইউ/এনএফ