রোহিঙ্গা নাগরিকদের মোবাইল সিম প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় সংগ্রাম কমিটি। তারা বলেন, বর্তমান টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। সেই দায়ভার ঘোচাতে তারা রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে সিম দেওয়ার পাঁয়তারা করেছে।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করেছে সংগঠনটি।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ মোবাইলফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত মায়ানমানের রোহিঙ্গা নাগরিকরা বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহারের পাশাপাশি মায়ানমারের এমটিএমসির টেলিকম নেটওয়ার্কও ব্যবহার করে আসছে। আর এটা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে মাঝে মাঝে বিটিআরসির কিছু কর্মকর্তাদের পরিদর্শনে পাঠানো হয়। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে সরকার দেশে যখন বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে। তখন সেই নীতিমালায় বলা হয় ১৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি যে কোনো ব্যক্তি জাতীয় পরিচয়পত্র বা তার পাসপোর্ট দিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। অথচ মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকরা আমাদের দেশের নাগরিকদের নামে ব্যবহৃত সিম অবৈধভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি মায়ানমারের টেলিকম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে মায়ানমারে টেলিকম প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ও ব্যবসা পরিচালনা করছে। টেলিকম সেবা ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা মায়ানমারে চলে গেছে। 

তিনি আরও বলেন, এই অবস্থার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সবার আগে অবৈধ নেটওয়ার্ক বন্ধ ও সব অবৈধ সিম জব্দ করতে হবে। দ্বিতীয়ত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে বসে স্থানীয় প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আতাউল্লাহ খান বলেন, আমরা বাংলাদেশি নাগরিকরা আজ মহা বিপদে। মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দিয়ে আমাদের জন্য এত বড় কাল হয়ে দাঁড়াবে তা বুঝতে পারিনি। আমরা দেখেছি মহিবুল্লাহ এই অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কীভাবে লাল লাখ রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমাবেশ করেছিল। রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে সিম ব্যবহার করে মাদক পাচার, অর্থ পাচার, চোরা চালান করে থাকেন। কোনোভাবেই রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে পাঁচটি করে সিম প্রদান করা যাবে না।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংগঠনের সদস্য সচিব এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী, লেবার পার্টির মহাসচিব আব্দুল্লাহ মামুন, সাধারণ নাগরিক সমাজের কো-অর্ডিনেটর শেখ ফরিদ, উখিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্নস্তরের নাগরিকবৃন্দ।

আইবি/এমএ