বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের যে চারটি মূলনীতি ছিল তার কোনটিই এখন দেশে বলবৎ নেই। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে অনেক বেশি পিছিয়ে গেছি ৭৫ সালের পর থেকে। সামাজিক যে প্রতিরোধ ছিল, সেই প্রতিরোধ এখন নেই। এটি বন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন সরকার ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ব্যবহার করছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন আয়োজিত আলোচনা চক্রে এসব কথা বলেন তিনি।

এম এম আকাশ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ধারায় আমরা নেই। আমরা আত্মসমর্পণ করে ফেলেছি। সরকার সুবিধার জন্য কালসাপ পুষছে। একদিন এই সাপ দংশন করবে। এর বিরুদ্ধে তরুণ সমাজের রুখে দাঁড়ানোর আগে আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে বাড়াতে হবে ৬০ দশকের ছায়া নটের মতো। সরকারকেও বুঝাতে হবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি হিসেবে আপনাকে যে ব্ল্যাংক চেকের ভোট দিয়ে দেওয়া হবে, তা ভাববেন না।

সংগঠনের সদস্য সচিব ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, আমাদের সমাজ সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা এখন দুই ঘণ্টায় নেওয়া হয়। কদিন পরে হয়তো পরীক্ষাই লাগবে না। জামায়াত ধর্মের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থ ও শিক্ষাও নিয়ন্ত্রণ শুরু করছে। সরকার ক্ষমতায় থাকতে যা যা করা দরকার তাই করছে। বামদের কর্মকাণ্ড হতাশাজনক। কারণ তারাই বেশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করত, এখন তা করছে না। 

তিনি বলেন, বর্তমানে নিরাপত্তার অভিযোগে সন্ধ্যার আগে বিভিন্ন উৎসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের কথা বলে। এটি অশনি সংকেত। এ জন্য ধর্মান্ধতা বেড়ে গেছে। তাই আলোচনা নয়, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে সাম্প্রদায়িকতাকে রুখতে আলোচনা নয়, মাঠে নামতে হবে। 

বক্তারা সাস্প্রদায়িকতা-সামাজিক অবক্ষয় ও রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শের রাষ্ট্র এবং সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

আলোচনা চক্রে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মানবাধিকার কর্মী, এ্যাড. সুলতানা কামাল, খুশি কবীর, ডা. সারোয়ার আলী, ডা. অসিত বরন রায়, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সচিব ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও অধ্যাপক রুবাইয়াত ফেরদৌস। 

আইবি/আরএইচ