আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ছয় সপ্তাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে এই সময় তাকে পূর্ণ ছুটিতে থাকতে হবে। নাকচ করা হয়েছে তার অনলাইনে অফিস করার আবেদন।

এ সময়ের জন্য ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম সহিদ উদ্দিনকে এমডির অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

গত ৭ জুলাই ঢাকা ওয়াসার বোর্ড সভায় ঢাকা ওয়াসার এমডির যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার এবং ৬ সপ্তাহ ছুটিতে থাকাকালীন সেখানে বসেই ভার্চুয়ালি অফিস করার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। কিন্তু বোর্ড সভা থেকে বিষয়টির তীব্র সমালোচনা আসে। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ঢাকা ওয়াসার এমডি এই সময় ছুটি পালন করতে পারবেন। কিন্তু সেখানে বসে ভার্চুয়ালি কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।

বোর্ড সভার এমন সিদ্ধান্তে পরও অনডিউটি থাকার কথা উল্লেখ করে এমডির পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগে একটি চিঠি দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসার এমডিকে ছয় সপ্তাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বসে ভার্চুয়ালি অফিস করার অনুমতি পাননি তিনি।

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ শাখা থেকে গত বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের অনুমতি পত্র জারি হয়।

২০০৯ সালে থেকে ঢাকা ওয়াসার এমডি তার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে যান। আর সে সময় তিনি কাউকে পরিপূর্ণ এমডির দায়িত্ব না দিয়েই প্রতি বছর অফিস আদেশ জারি করা হতো। সেখানে আরও উল্লেখ থাকতো তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন অনলাইনে অফিস করবেন। পাশাপাশি এমডির পক্ষে একজনকে রুটিন দায়িত্ব পালন করতে বলা হতো।

একইভাবে গতবছর যুক্তরাষ্ট্রে ছুটিতে থাকাকালীন অনলাইনে নথিতে স্বাক্ষর করেছেন ওয়াসার এমডি। অন্যদিকে ওই সময়ে এমডির রুটিন দায়িত্ব পালন করা ওয়াসার পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেমও বিভিন্ন নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। যার কারণে পরবর্তীতে নানান সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাই ওয়াসার বোর্ড সভায় এবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এমডি পূর্ণ ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারবেন। তবে ভার্চুয়ালি কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।

ঢাকা ওয়াসার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বোর্ড সভার এমন সিদ্ধান্তের পরও তাকসিম এ খান স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি দেন, ছুটিতেও ভার্চুয়ালি অনডিউটিতে থাকার জন্য। এ অবস্থায় ভ্রমণের অনুমতিপত্র জারি হলেও ভার্চুয়ালি অফিস করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে। তার মানে তিনি ছয় সপ্তাহের ছুটি পেয়েছেন। তবে অনলাইনে নিজ দায়িত্বে থাকতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, গত ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান যুক্তরাষ্ট্রে ছুটিতে ছিলেন। এরও আগে তিনি ২০১৯ সালের ১১ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। সেসময় সেখানে থেকে ভার্চুয়াল অফিস করেছেন তিনি।

২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে বর্তমান দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

এএসএস/এমএইচএস