ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুব কবীর মিলন বলেছেন, আমরা ইভ্যালির ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী। নতুন পরিচালনা পর্ষদ ফান্ড আনতে পারলে ও ব্যবসা পরিচালনা করতে পারলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। তবে গ্রাহক মার্চেন্ট সবাইকেই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইভ্যালির ধানমন্ডির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

মাহবুব কবীর মিলন বলেন, যে অবস্থানে আমরা ইভ্যালি রেখে যাচ্ছি এবং যা দেখে গিয়েছি তাতে বলতে পারি অবশ্যই মার্চেন্ট এবং গ্রাহকদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে ও পরামর্শ দিতে হবে। অপেক্ষার এ সময় স্বল্প হতে পারে আবার দীর্ঘও হতে পারে। কেননা ইভ্যালি চলবে আদালতের পর্যবেক্ষণে। আদালত নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও দেবেন। আর আমরাও প্রচ্ছন্নভাবে তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া এবং মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করব।

আরও পড়ুন : ইভ্যালির টাকা ফেরত অসম্ভব: চেয়ারম্যান

তিনি বলেন, যদি ব্যবসা সচল হয় তাহলে আজ হোক বা কাল একটা সময় হয়ত প্রয়োজন মেটাতে পারব। কিন্তু এখনই যদি সবাই এসে ধরে ফেলে তাহলে বড় সমস্যা তৈরি হবে এবং কোনো পক্ষই লাভবান হতে পারবেন না।

ইভ্যালির দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, না বুঝেই আমরা এটার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। বুঝতেও পারিনি যে এতটা কঠিন পথ চলা হবে। তবে সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনাগুলো আমরা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আদালতে আমরা যে রিপোর্ট সাবমিট করেছি সেখানে সার্বিক নির্দেশনা মানা হয়েছে।

অনেকেই প্রশ্ন করে এ ১২ মাস আপনারা কী করেছেন? কিছুই তো করতে পারলেন না। গ্রাহকদের টাকা দিতে পারলেন না বা ব্যবসাও করতে পারলেন না। আসলে আমরা ব্যবসা কিংবা টাকা দিতে আসিনি। আদালত আমাদের এ দায়িত্ব দেননি। আমরা শুধু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এখানে এসেছিলাম। সবকিছু গুছিয়ে আদালতের কাছে পেশ করেছি যে ইভ্যালি চলতে পারবে কি পারবে না বা এর সক্ষমতা কতটুকু আছে। সর্বশেষ এ পরিচালনা বোর্ডের ওপর আরও একটি নির্দেশনা ছিল যে কেন ইভ্যালি বন্ধ হয়েছে সেটি খুঁজে বের করা। এসব বিষয় খুঁজে বের করে আদালতে আমরা রিপোর্ট দিয়েছি। তবে রিপোর্টে কি রয়েছে সেটি জনসম্মুখে প্রকাশ করব না কেননা এটি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত।

আরও পড়ুন : ইভ্যালির আটকে থাকা টাকা ফেরত না পাওয়ার কারণ জানা‌লেন এম‌ডি

তিনি আরও বলেন, আমরা একটি কথা বলতে পারি যে ব্যবসাটি চলার মতো অবস্থায় এসেছে বলেই নতুন বোর্ড অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ নতুন বোর্ডকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে চলে যাব। তার মানে ব্যবসা চলার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই নতুন পরিচালকদের বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছি। তারা যদি সেগুলো নিশ্চিত করে  প্রতিপালন করেন তাহলে আমরা বলতে পারি অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। আপনারা নতুন চিত্র দেখতে পাবেন।
আগের ইভ্যালি ও বর্তমান ইভ্যালির মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকবে যদি তারা যথাযথভাবে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন।

এ মুহূর্তে ইভ্যালির ব্যবসা পরিচালনার জন্য কত টাকা প্রয়োজন, এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহবুব কবির বলেন, এটি আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারি না। কারণ তাদের ধার দেনার পরিমাণটি সম্পূর্ণভাবে আমরা তুলে আনতে পারিনি। শত চেষ্টা করেও আমরা সার্ভার ঠিক করতে পারিনি। এ বিষয়টি আমরা রিপোর্টেও উল্লেখ করেছি। যেহেতু সম্পূর্ণ দায় এবং দেনা আমরা তুলে আনতে পারিনি তাই নির্দিষ্ট করে এটি বলা সম্ভব হচ্ছে না কত টাকা প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে যতগুলো তথ্য পেয়েছি সেগুলো রিপোর্টে উল্লেখ করেছি। এখন পর্যন্ত ইভ্যালির ওয়্যারহাউজে (গোডাউনে) ২৫ কোটি টাকার মালামাল ভালো রয়েছে।

আরএইচটি/এসকেডি