সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেছেন, আইনের বিধানকে উপেক্ষা করে মাতৃত্বকালীন সুবিধা সংকুচিত করে নতুন হিসাব পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে। যাতে নারী শ্রমিকদের প্রতি অসদাচরণের তদন্তে কমিটি গঠনের বিধানে হাইকোর্টের রায়কে লঙ্ঘন করা হয়েছে। অবিলম্বে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সংশোধিত ছুটি বিধিমালা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। 

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট আয়োজিত সংশোধিত শ্রম বিধিমালায় শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাগুলো বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম বিধিমালা দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি বলেন, আইন কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তার ব্যাখ্যা হলো বিধিমালা। অথচ ২০১৮ সালে শ্রম আইন সংশোধনের পর সংশোধিত বিধিমালা পেতে আমাদের প্রায় ৪ বছর অপেক্ষা করতে হলো। শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী বিধিগুলো বাতিলের জন্য দেশের জাতীয় শ্রমিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে ৫৬টি সুপারিশ করা হয়েছিল। কয়েকটি সুপারিশ গ্রহণ করা হলেও উৎসব বোনাসের নিম্নতম সীমা নির্ধারণসহ প্রধান ৪০টি সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা তহবিলে টাকা জমা রাখার হার কমিয়ে কারখানা বা প্রতিষ্ঠান বন্ধে শ্রমিকদের চাকরি অবসানে প্রাপ্য আইনানুগ পাওনা পাওয়ার ক্ষেত্রকে অনিশ্চিত করা হয়েছে। রাতের শিফটের শ্রমিকদের চিকিৎসা সুবিধা, বিশ্রাম কক্ষ, ঠান্ডা পানি, ছুটির বিপরীতে অর্থনৈতিক সুবিধা, কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে শ্রমিকের নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সংকুচিত করা হয়েছে। অসদাচরণের অভিযোগ নিষ্পত্তির যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে তা শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতার বিদ্যমান অবস্থায় শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিধিমালা শ্রমিকদের দুর্ভোগকে আরো বাড়িয়ে দেবে। রীতি অনুসারে শ্রমিকদের প্রাপ্যতাকে কমানো যায় না অথচ শ্রম আইন বা বিধিমালা যতবার সংশোধন করা হয়েছে প্রতিবারই শ্রমিকের সুরক্ষার পরিবর্তে কৌশলে শ্রমিকের অধিকার সংকুচিত করা হয়েছে। 

সংশোধিত বিধিমালায় শ্রমিকদের সুরক্ষার পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসমূহের ক্ষমতায়ন এবং ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার অবাধ করার পরিবর্তে নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা প্রতিফলিত হয়েছে। 

বক্তারা শ্রম আইন এবং বিধিমালার শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাগুলো বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন এবং গণতান্ত্রিক শ্রম বিধিমালা প্রণয়নের দাবি জানান।

চা শ্রমিকদের দৈনিক ৫০ টাকা হারে ২০ মাসের এরিয়ারের টাকা শারদীয় উৎসবের পূর্বে সম্পূর্ণ পরিশোধ করার এবং প্রকৃত চালকদের তালিকা তৈরি করে ব্যাটারি রিকশা-ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়ার আহ্বান জানান। 

সংগঠনের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সহসম্পাদক জনার্দন দত্ত নান্টু, নবকুমার কর্মকার, ইমাম হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম আরা প্রমুখ। 

আইবি/এসএম