চট্টগ্রামের ডাবলমুড়িং এলাকায় বন্ধুকে এসিড নিক্ষেপের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কামাল হোসেন শান্তকে ২৪ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুরের শাহরাস্তি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১ অক্টোবর) চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল এম এ ইউসুফ।

তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া নামে একজনকে পূর্ব শুত্রুতার জের ধরে এসিড নিক্ষেপ করেছিল কামাল। এতে জাকারিয়ার চোখ, মুখ, বুক, হাতে এসিড দ্বারা দগ্ধ হয়ে গিয়েছিল। এসিড নিক্ষেপের পর জাকারিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কামাল ভিকটিমের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। এ ঘটনায় ভিকটিম জাকারিয়ার বাবা মোহাম্মদ ইউনুস ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

এবছরের ২৪ এপ্রিল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত আসামি কামালকে ওই মামালায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।  

এরপরই র‌্যাব যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় কামাল হোসেনকে চাঁদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক বলেন, ১৯৯৮ সালে ঘটনার পর থেকে তাকে এসিড নিক্ষেপের মামলায় কামালকে আর গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকেই সে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে নিজেকে আত্মগোপনে রাখেন। একসময় তার নিজ এলাকা চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ চলে যান। সেখানে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত স্টুডিওর কর্মচারী হিসেবে ছবি ওঠানো, বিয়ে বাড়ির প্রোগ্রামের কাজ করতেন। ২০০১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত নিজ এলাকায় কৃষিকাজ করেন। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানায় দায়েরকরা ডাকাতির মামলায় জেল হাজতে ছিলেন কামাল। ২০০৭ সালে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কামাল ঢাকার যাত্রাবাড়ীর কাঁচামালের আড়তে সবজির ব্যবসা করেন। ২০১০-২০১১ সালে সে পুনরায় ডাকাতির মামলায় হাজতবাস করেন। ২০১৩ সালে জেল থেকে মুক্তি পান। ২০১৩ সালে সে তার এলাকা ছেড়ে দেন। পরে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থেকে শাহারাস্তিতে চলে এসে জমি কিনে বালু ব্যবসা শুরু করেন।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, কামালের বিরুদ্ধে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম ৮টি মামলা রয়েছে। আর ঘটনার শিকার হাফেজ মো. জাকারিয়া বর্তমানে সৌদি আরব কর্মরত রয়েছেন।

কেএম/এসএম