তেলের জন্য ভিড়

যতদূর চোখ যায়, শুধু অন্ধকার। বাসা-বাড়ি, দোকানপাট কিংবা সড়ক- কোথাও জ্বলছে না বিদ্যুতের আলো। এমন ভিন্ন এক ঢাকা আগে খুব কমই দেখেছে মানুষ। 

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে দেশের বিশাল একটি অংশ বিদ্যুৎহীন ছিল দুপুর থেকে। সন্ধ্যার পর রাজধানীর অল্প কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ এলেও বেশিরভাগ অংশ এখনো অন্ধকার, জ্বলছে না সড়কবাতিও।   

তবে কিছু কিছু ভবন ও দোকানে জেনারেটরের মাধ্যমে বাতি জ্বলছে। দুপুর থেকে জেনারেটরগুলো চলছে। তাই তেল শেষের দিকে। উপায়ান্তর না দেখে লোকজন জেনারেটরের জন্য তেল কিনতে ভিড় করছেন রাজধানীর ফিলিং স্টেশনগুলোতে। 

ফিলিং স্টেশনের ভেতরে মানুষ ধরার ঠাঁই নেই। লাইন চলে এসেছে মূল সড়কে। আরও লোকজন আসছে। ভিড় বাড়ছে। তেল সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ফিলিং স্টেশনের কর্মচারীদের। 

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় মক্কা ফিলিং স্টেশনের ভেতরে এবং বাইরের মূল সড়কেও মানুষের ভিড়। তাদের সবার হাতে ড্রাম, কনটেইনার, বোতল বা বিভিন্ন ধরনের পাত্র। তারা সবাই এসেছেন জেনারেটরের জন্য জ্বালানি তেল কিনতে। 

শুরুর দিকে এমন ছিল না। তবে সময় যত গেল, ততই লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকল। এক পর্যায়ে ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ লোকজনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিল। লোকজন লাইনে দাঁড়ালেও তেল সরবরাহের স্থলে জটলা তৈরি হয়েছে, চলছে কে কার আগে তেল নেবে- সেই প্রতিযোগিতা। 

রাজধানীর গুলশান এলাকার এক বাসা থেকে এ ফিলিং স্টেশনে জেনারেটরের তেল কিনতে এসেছেন বাসাটির কেয়ারটেকার সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, কারেন্ট নেই, এদিকে জেনারেটরের তেল শেষের দিকে। তেল নিতে এসে বিপদে পড়ে গেছি। লোকজনের দীর্ঘ লাইন। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও তেল নিতে পারছি না। মানুষের ভিড় মূল সড়ক ধরে অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেছে। শত শত মানুষ এখানে তেল নিতে সিরিয়ালে দাঁড়িয়েছেন।

তেল সরবরাহের কাজে নিয়োজিত ফিলিং স্টেশনের কর্মী মামুন বলেন, প্রচুর লোক এসেছেন। সবাইকে সিরিয়ালে থাকতে বলেছি। কিছু লোক সিরিয়াল ভেঙে সামনে এসে জটলা তৈরি করছেন। সিরিয়ালে থাকলে সবাই তেল পাবেন- তারা এটি বুঝতে চাইছেন না।   

সময় যত যাচ্ছে ফিলিং স্টেশনে তত মানুষের ভিড় বাড়ছে। এদিকে আশেপাশের এলাকা থেকেও লোকজন এই ফিলিং স্টেশনে আসছেন। রামপুরা থেকে ফিলিং স্টেশন আসা রইস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, প্রথমে দুটি ফিলিং স্টেশনে গিয়েছিলাম। ভিড় দেখে এখানে এসেছি। এখানেও দেখছি ভিড়। শেষ পর্যন্ত তেল পাব কি না, তা নিয়েই সংশয়ে আছি।

এএসএস/আরএইচ