মিসর থেকে বোয়িংয়ের দুটি উড়োজাহাজ লিজ সংক্রান্ত বিষয়ে ১১শ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুই জিএমসহ আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে উপ-পরিচালক আনোয়ারুল হক ও সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম।

যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কস্ট অ্যান্ড বাজেট বিভাগের জিএম সি এম খায়রুল আলম, কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস এ এস এম মঞ্জুর ইমাম, চিফ অব টেকনিক্যাল হাসান ইমাম, কর্পোরেট প্লানিং বিভাগের জিএম মো. বেলায়েত হোসেন এবং ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড মেশিন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক এম এম আসাদুজ্জামান।

এ বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, আজ যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তারা মূল্যায়ন কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। এরপর নথিপত্রের সঙ্গে বক্তব্য মিলিয়ে দেখবে অনুসন্ধান টিম। এ ছাড়া অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আরও বেশকিছু কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে বলেও জানা গেছে।

গত ২ অক্টোবর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক পরিচালক ও তিন জিএমসহ আট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল সংস্থাটি। ১১ ও ১২ অক্টোবর যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এক ডজনের বেশি কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।

অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার (মিসর) থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর নামে দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কিন্তু বছর না যেতেই ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটি উড়োজাহাজের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়।

উড়োজাহাজটি সচল রাখার জন্য ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ওই ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে। এতসব প্রক্রিয়ায় ইজিপ্ট এয়ার ও মেরামতকারী কোম্পানিকে পাঁচ বছরে বাংলাদেশ বিমানের গচ্চা দিতে হয়েছে ১১শ কোটি টাকা।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তদন্তে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি দুদকে পাঠানোর সুপারিশ করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বিষয়টি দুদকে আসার পর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। ওই টিম গত ২৮ মে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে চিঠি পাঠায়।

পরে মিসর থেকে বোয়িংয়ের দুটি উড়োজাহাজ লিজ সংক্রান্ত বিষয়ে ১১শ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয়ে গত ১ জুন অভিযান চালায় দুদক। দুদক উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে ওই অভিযান চালানো হয়। মাঝে বদলিজনিত কারণে দুদক টিম পুনর্গঠন করা হয়।

আরএম/আরএইচ