ভিক্ষা বা হাত পেতে নয়, বিকল্প কর্মসংস্থান ও জীবনমান উন্নয়নে তৃতীয় লিঙ্গে মানুষের মাঝে সেলাই মেশিন বিরতণ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ে।

শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে পাথওয়ের প্রধান কার্যালয়ে তাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব (যুগ্ম-সচিব) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ পরিষদের উপ-পরিচালক ভবেন্দ্র নাথ বাড়ৈ, নোয়াখালী জার্নালিস্ট ফোরাম-এনজেএফ’র সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার এস এম ফয়েজ।

অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, চাঁদাবাজি কিংবা হাত পেতে জীবিকা নয়, স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ চায় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী। তাদের মূলধারায় আনতে কাজ করছে সরকার।

তিনি বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই বলেই তারা চাঁদাবাজি কিংবা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। অপরাধ থেকে তাদের ফিরিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কাজ করছে পাথওয়ে। পাথওয়েকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

জসিম উদ্দিন বলেন, পৃথক লিঙ্গীয় পরিচয়ের কারণে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। পরিবারের কাছে তারা কোনো সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজ পরিবার তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তাছাড়া পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতার পাশাপাশি পারিবারিক সম্পত্তির ওপর তাদের কোনো অংশীদারিত্ব দেওয়া হয় না।

অনুষ্ঠানে পাথওয়ে‘র কর্ণধার নির্বাহী পরিচালক মো. শাহিন বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়ের মানুষেরা সমাজের সর্বক্ষেত্রে অবজ্ঞা, অবহেলা ও নানা অপমানের শিকার হয় সবসময়। তারা খুবই অসহায়, তাই এদের জীবনমান উন্নয়ন খুবই জরুরি। আর এরজন্য যে বিষয়গুলো বেশি প্রয়োজন তা হলো সর্বদাই তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে আমাদের।

মিতনি বলেন, তারা আমাদের কারো না কারো সন্তান, তাই তাদের দূরে ঠেলে না দিয়ে স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে হবে। কর্মক্ষেত্রে তাদের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। তবেই ধীরে ধীরে একদিন সমাজের মূল স্রোতধারায় পর্যায়ক্রমে ফিরে আসবে অবহেলিত এই জনগোষ্ঠী। জৈবিক চাহিদার বাইরে তাদের সব ধরনের কর্মক্ষমতা আছে তবে কেন তারা পিছিয়ে?

তিনি বলেন, বৃহত্তর মিরপুরে বসবাসরত তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়ের মানুষগুলোর জীবন যাপন দেখে আমার নিজের কাছে খুব খারাপ লাগে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করলে তারা তাদের জীবনের না বলা গল্প আমার সঙ্গে শেয়ার করে। তারা এভাবে আর বেঁচে থাকতে চান না, নিজেরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে চান। তাই তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফেরাতে পাথওয়ের এ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

জেইউ/এমএ