সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় বলেছেন, জলবায়ু কার্যক্রমে ব্যয়ের জন্য সংগৃহীত অর্থ এবং গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড দিয়ে নেওয়া বেশিরভাগ প্রকল্পই অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। জলবায়ু অর্থ এভাবে নষ্ট করলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, যেটি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি বয়ে নিয়ে আসবে।

শনিবার (২২ অক্টোবর) ডেইলি স্টার সেন্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আসন্ন কপ-২৭ এ বাংলাদেশের ভূমিকাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সরকারপ্রণিত কর্মকৌশলে নাগরিক সমাজের মতামত শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন

তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এবারের সমঝোতা সম্মেলনে একজনও সংসদ সদস্য যুক্ত নয়। অনেক সময় আমরা দেখি নাগরিক সমাজের সঙ্গে সবসময় মধুর সম্পর্ক থাকে না, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের মতো একটি জায়গায় নীতিনির্ধারক এবং নাগরিক সমাজের মাঝে কোনো রকম দূরত্ব থাকা উচিত নয়। 

তিনি আরও বলেন, এখনই বিশ্বের সব শক্তি এবং মত এক হয়ে যাবে না, তাই আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলবায়ু অভিবাসী। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে কথা বলে যাচ্ছি, কিন্তু দুঃখজনক হলো বিশ্ব সম্প্রদায়ের থেকে এই বিষয়ে আমরা যথাযথ উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি না। অনেক উন্নত রাষ্ট্র মনে করেন আমরা এ বিষয়টিকে সামনে আনছি তাদের দেশে অভিবাসী হওয়ার জন্য। কিন্তু তাদের বলে দিতে চাই- আমাদের সাধারণ মানুষের কোনো আগ্রহ নেই বাস্তুচ্যুত হয়ে তাদের দেশে যাওয়ার, আমাদের যে ক্ষয় ক্ষতি তারা করেছেন তার ক্ষতিপূরণগুলো দিয়ে দেন। 

সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, আমাদের জলবায়ু সমঝোতা আলোচনায় একটি সমন্বয়হীন প্রক্রিয়ায় চলছে। একটি যথাযথ সমন্বিত ব্যবস্থা প্রণয়নের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। নাগরিক সমাজ, নীতিনির্ধারক, গবেষক সমাজের মধ্যে একটি সমন্বয় তৈরি করা জরুরি। আমরা আমাদের সমস্যা এবং জলবায়ু অভিঘাতের ক্ষয় ক্ষতিগুলোকে গ্রহণযোগ্য এবং বিজ্ঞানসম্মত প্রক্রিয়ায় এখনো তুলে ধরতে পারিনি। 

তিনি অধিক ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলোর জন্য আলাদা অর্থায়ন কাঠামোর দাবি জানান এবং বাংলাদেশ সরকারকে এটি নিয়ে কাজ করতে আহ্বান জানান। এছাড়া গবেষক, নাগরিক সমাজের মধ্যে একটি জোটবদ্ধ কর্মসূচি থাকা দরকার, সংসদ সদস্যদেরও দায়িত্ব আছে, নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে যে কথাগুলো আসছে সেগুলো নিয়ে সংসদের ভেতরে বাহিরে কথা বলতে হবে।   

ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ডের প্রধান ড. গোলাম রাব্বানি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়নের অন্তত ৫০ শতাংশ হওয়া উচিত অভিযোজন ফান্ড, কিন্তু আমরা সেটি পাচ্ছি না। বর্তমান ক্লাইমেট ফাইন্যান্সিংয়ের ৭০ শতাংশ হয়ে যাচ্ছে ঋণ। যেটি ক্লাইমেট ফাইন্যান্সিংকে ঋণ নির্ভর করে দিচ্ছে। এটি বন্ধে আমাদের চাপ দিতে হবে। উন্নত বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনকে মেনে নিলেও ক্লাইমেট চেঞ্জের অভিঘাতকে মেনে নিতে চাচ্ছে না এটি পরিষ্কার দ্বিচারিতা।   

সিপিআরডির নির্বাহী প্রধান মো. শামসুদ্দোহার উপস্থাপনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, ডিয়াকোনিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর খোদেজা সুলতানা লোপা, এসডিএসের নির্বাহী পরিচালক রাবেয়া বেগম প্রমুখ। 

আইবি/এমএ