আগামী ডিসেম্বরে দেশে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি)। এ বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রাত ১টা ১০ মিনিটে আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন যে এটা (ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং) ভালোভাবে মোকাবিলা করেছো, এ জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে আরেকটা আসবে, সেটির ব্যাপারে একই রকম সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। 

বিএমডি আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে সিত্রাং-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ডিসেম্বরে দেশে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে। 

ব্রিফিংয়ের শুরুতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মহান আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। যেভাবে সিত্রাং সৃষ্টি হয়েছিল, যেসব পূর্বাভাস ছিল, যেভাবে এর বিস্তৃতি ছিল, ধারণা করা হচ্ছিল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে। আল্লাহর রহমতে সিত্রাং ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই ছিল, এটা প্রবল বা অতিপ্রবল বা সুপার সাইক্লোন কোনোটিতেই রূপ নেয়নি। বাতাসের গতিবেগ ৮০ কিলোমিটারের উপরে যায়নি। 

আমাদের পূর্বাভাস ছিল, এটা বরগুনা ও পটুয়াখালীর উপর দিয়ে যাবে। পরবর্তীতে এটি আরও উত্তর পূর্ব দিকে টার্ন নেওয়ার কারণে পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় সতর্কতার শুরু থেকেই আমাদের মাঠ প্রশাসন ও ভলান্টিয়াররা কাজ করেছেন। 

তিনি বলেন, বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব নেই। চট্টগ্রামসহ অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ সেবা যেগুলো বিচ্ছিন্ন ছিল, সেগুলো এখন মেরামত করে দ্রুত সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় আমরা দেখেছি, গাছ ভেঙে পড়ে কয়েক জায়গায় রাস্তা বন্ধ ছিল। তবে দ্রুত এগুলো সরানো হয়েছে। মোহাম্মদপুরে বেশ জলাবদ্ধতা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় কোনো ক্ষতি হয়নি। 

তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতি হওয়া ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য অবশ্যই আমরা মন্ত্রণালয় থেকে টিন দেব এবং গৃহনির্মাণ মজুরির জন্য আমরা নগদ অর্থ দেব। 

নিয়ম আছে যে দুর্যোগের পর মাঠ প্রশাসন একটা জরিপ করবে, তারপর জেলা পর্যায়ে ডিসিরা ডি ফর্মের মাধ্যমে আমাদের কাছে রিপোর্ট পাঠাবেন। এরপর আমরা একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করব। সেখানে যার যার মন্ত্রণালয় ক্ষয়ক্ষতি উপস্থাপন করবে। এর মধ্য দিয়ে আমরা সহায়তা ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু করব। এটা করতে ৭ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। 

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনকে বলেছি চাহিদা পাঠাতে। আগামীকাল চাহিদা এলেও আমরা বরাদ্দ দিতে পারব। আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ টিন ও নগদ টাকা আছে। 

এসএইচআর/এসকেডি