ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজধানীতেও অতিমাত্রায় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। এতে অনেক গাছ ভেঙে গেছে। একইসঙ্গে ক্ষতির মুখে পড়েছে গাছে বাসা বাঁধা পাখিগুলো। ঝড়ের ঝাপটায় কোনো পাখি মারা গেছে আবার কোনো পাখি আধমরা অবস্থায় গাছের নিচে পড়ে আছে।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, শহীদ মিনারের পাদদেশে পড়ে মরে আছে কাক-চিলসহ বহু পাখি। পাশে কয়েকটি বেঁচে থাকলেও অধিকাংশ পাখির অবস্থা ছিল আধমরা। বৃষ্টিতে ভিজে জবুথবু অবস্থা পাখিগুলোর। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে মানুষ জড়ো হয়ে পাখিগুলোকে বিরক্ত করা শুরু করে। নিরাপদ স্থান খুঁজতে শেষ চেষ্টা হিসেবে বেঁচে থাকা পাখিগুলো এদিক সেদিক ছুটোছুটি করছে। কোনোটিকে পড়তে হচ্ছে কুকুরের কবলে। কয়েকটি কুকুর মুখে করে পাখিগুলোকে নিয়ে যেতেও দেখা গেছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে আহত পাখিগুলো উদ্ধার করে বন বিভাগ।

পাখিপ্রেমিরা বলছেন, ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণিকূলের আবাসস্থল যখন বাসের উপযোগী থাকে না তখন অনেক প্রাণী নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসে। কিন্তু তাদের এই বিপদের সময় আশ্রয়স্থলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ নিয়ে বনবিভাগের কাজ করার সুযোগ থাকলেও তারা নীরব ভূমিকা রাখে। 

কাসফিয়া নাসরিন ইভা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিতে বন্য প্রাণিকূলের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢাকায়ও হয়েছে তবে উপকূলের তুলনায় কম। এ পাখিগুলোর এমন জবুথুবু অবস্থা দেখেই অনুমান করা যায়, বিপর্যস্ত এলাকার ঠিক কী অবস্থা।

এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, লোকালয়ের কাছে চলে আসা অনেক বন্য প্রাণী মানুষের নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে। সুযোগ পেলেই যে কেউ ডিল মারতে পারে। এ ধরনের অকারণ নিষ্ঠুরতার ঘটনা শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়েই ঘটে এমন নয়। দেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষ স্বাভাবিক সময়েও অকারণে প্রাণী হত্যা করে, প্রাণীদের ওপর নিষ্ঠুরতা চালায়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

এমএইচএন/এসকেডি