ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, তামাক মানুষকে ধ্বংস করার অন্যতম উপাদান। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করলে ২০৪০ সালের আগেই দেশকে তামাকমুক্ত করা সম্ভব হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সর্বস্তরে এ সচেতনতা পৌঁছে দিতে হবে।

তিনি বলেন, এন্টি টোব্যাকোর বিরুদ্ধে বিদেশি ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলো বেশি বিরোধিতা করছে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের ব্যবসায়ী ও কোম্পানির তামাক নিয়ন্ত্রণের বিপক্ষে অবস্থান কম। এটি ভালো দিক।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সিরডাপ মিলনায়তনে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে অগ্রগতি ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরাই সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে সহজে। তাদের সচেতনতায় আরও লিখতে হবে। সম্প্রতি সাংবাদিকদের সোর্স প্রকাশ না করার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় তাদের স্বাধীনতাকে বৃদ্ধি করেছে। এই তামাক নিয়ন্ত্রণ পুরস্কার আরও উৎসাহিত করবে সাংবাদিকদের।

আরও পড়ুন : প্রজ্ঞা তামাক নিয়ন্ত্রণ পুরস্কার পেলেন ৪ সাংবাদিক

প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান মো. হাসান শাহরিয়ার মূল বক্তব্যে বলেন, সব ধরনের পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রাখার বিধান বিলুপ্ত করার প্রস্তাবটি জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। কারণ ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রেখে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে অধূমপায়ীদের সুরক্ষা প্রদান সম্ভব নয়। একইভাবে বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ না করা গেলে তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ছোবল থেকে রক্ষা করা যাবে না। বিশ্বের ৫০টি দেশ ইতোমধ্যে বিনামূল্যে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছে। কারণ সিএসআর’র নামে কোম্পানিগুলো নিজেদের ব্র্যান্ড প্রচারের কাজ করে থাকে।

তিনি আরও বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন খসড়াটি বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে এখন চূড়ান্ত হওয়ার পথে। তবে তামাক কোম্পানি সরকারের এই পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করতে নানাবিধ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তামাকের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। অসুস্থ ও পঙ্গুত্ববরণ করেন আরও কয়েক লাখ মানুষ।

অনুষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণ সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০২২-এ চার জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)-এর সহায়তায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা যৌথভাবে এ আয়োজন করে।

আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটনের সভাপতিত্বে কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মানস’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী, বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক প্রমুখ।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা।

আইবি/এসএসএইচ