রাজধানীবাসীর জন্য নিরাপদ খাদ্যের সহজলভ্যতার পাশাপাশি কৃষকদের জন্য পণ্যের সঠিক মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে খিওগাঁওয়ে উদ্বোধন করা হয়েছে কৃষকের বাজার।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় রাজধানীতে এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপনের কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।

শুক্রবার ( ৪ নভেম্বর) খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর গেট ও আনসার হেড কোয়ার্টারের মাঝের রাস্তায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করা হয়।

এই বাজারটিতে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রূপগঞ্জ থেকে ১০ জন কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল বিক্রি করবেন। এই ১০ জন কৃষকের সবাইকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে।

এদিকে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ছয়টি কৃষকের বাজার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ইতোমধ্যে চারটি কৃষকের বাজার স্থাপিত হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ খিলগাঁওয়ে ঢাকা দক্ষিণের পঞ্চম কৃষকের বাজার উদ্বোধন করা হলো।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সুয়ে মেন জো উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ডিএনসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের নের্তৃত্বে ডিএসসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে বাজার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এ বাজারগুলোতে কৃষকের বাজারের জন্য একটি কর্নার প্রদান করা যেতে পারে।

ডিএনসিসির এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম বলেন, এলাকাবাসীর জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে এটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কর্তৃক গৃহীত একটি পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। এটি সফল ও টেকসই করতে আমারা সব ধরনের সহযোগিতা করবো। এখানে যেন কৃষকদের পরিবর্তে কোনো ব্যবসায়ী বা মধ্যস্বত্বভোগী সবজি বিক্রি করতে না পারে সেদিকে নিয়মিত তদারকি করা হবে।

রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নিহারঞ্জন রায় বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বর্তমানে নিরাপদ ও জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষে জোর দিয়েছে। যে কৃষকদের বাছাই করা হয়েছে, তারা সবাই স্বাস্থ্যকর উপায়ে সবজি চাষ করেন। উপজেলা কৃষি অফিস নিয়মিত তাদের মনিটরিং করে। ফলে আমরা এ সমস্ত কৃষকদের উৎপাদিত শাক-সবজি ও ফলমূলের গুণগতমানের নিশ্চয়তা দিতে পারি।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, নিরাপদ খাদ্য পাওয়া ঢাকাবাসীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে কৃষকের বাজারের মাধ্যমে আমরা মানসম্পন্ন শাক-সবজি পাচ্ছি। বাজারটি সফলভাবে পরিচালনায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি কৃষকদের প্রতি অনুরোধ তারা যেন মানসম্পন্ন পণ্য বিক্রি করেন।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, কৃষক যেন ন্যায্যমূল পান ও ভোক্তাদের নিরাপদ খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডিএনসিসি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সহযোগিতায় কৃষকের বাজার স্থাপন করা হয়েছে। বাজারটি পরিচালনার ক্ষেত্রেও সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।

এএসএস/কেএ